
আমার মায়ের সোনার নোলক হারিয়ে গেল শেষে
হেথায় খুঁজি হোথায় খুঁজি সারা বাংলাদেশে।
বাংলা সাহিত্যের এরকম অসংখ্য সাড়া জাগানিয়া পঙক্তি ও কবিতার জনক বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদের ৮৭তম জন্মদিন আজ ১১ জুলাই, সোমবার। ১৯৩৬ সালের এই দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌড়াইল গ্রামের মোল্লাবাড়িতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রবাদপ্রতিম এই কবি জন্মগ্রহণ করেন।
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদ। তিনি শুধু কবিই ছিলেন না। তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক ছিলেন। তবে কবিতাতেই আল মাহমুদ জ্বলে উঠেছিলেন বারুদের মতো।
“অথচ ঘুমের মধ্যে কারা যেনো, মানুষ না জ্বীন
আমার কবিতা পড়ে বলে ওঠে আমিন, আমিন।”
– আল মাহমুদ
প্রথমে তাঁর লিখনিতে প্রেমের কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও ১৯৯০-এর দশক থেকে তাঁর কবিতায় বিশ্বস্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস উৎকীর্ণ হতে থাকে। এজন্য তিনি তথাকথিত প্রগতিশীলদের সমালোচনার মুখোমুখি হন। ১৯৯৩ সালে বের হয় তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘কবি ও কোলাহল’। ইসলামি আদর্শের প্রতিফলন ঘটতে থাকে তাঁর লেখায়। ফলে এক শ্রেণির প্রতিক্রিয়াশীল বুদ্ধিজীবী মহল তাঁর সমালোচনায় মেতে ওঠে। ইসলামি রাজনীতির দিকেও কবি কিছুটা ঝুঁকে পড়েন।
আল মাহমুদ : একটি নাম, একটি ইতিহাস
কোনো এক ভোর বেলা, রাত্রি শেষে শুভ শুক্রবারে
মৃত্যুর ফেরেস্তা এসে যদি দেয় যাওয়ার তাকিদ;
অপ্রস্তুত এলোমেলো এ গৃহের আলো অন্ধকারে
ভালোমন্দ যা ঘটুক মেনে নেবো এ আমার ঈদ।
– আল মাহমুদ
বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তিতুল্য কবি আল মাহমুদ ধুলোমাটির এই পৃথিবীর সমস্ত মায়া ছিন্ন করে বিদায় নিয়েছেন। লম্বা সময় ধরে অসুস্থ এ কবিকে নিয়ে সাহিত্যপ্রেমীদের সকল দুশ্চিন্তার অবসান ঘটেছে ফাল্গুনের তৃতীয় রাতে। ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ তারিখে হারিয়ে গেছেন এই মহান কবি চিরতরে। আল্লাহ্ কবির সুপ্ত ইচ্ছে পূরণ করেছেন; শুক্রবার রাত ১১টা ৫ মিনিটে বিদায় নিয়েছেন কবি আল মাহমুদ। ইচ্ছে পূরণ হলো হয়তো! এটা কি তবে সৌভাগ্যের মৃত্যু? কে জানে!
পরিশেষে পরোয়ার দেগারের সমীপে কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা
মরহুম কবিকে রাব্বে কারীম জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুন।
আর কবির কন্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে আমাদের ও শপথ হোক,
“আমাদের ভয় দেখিয়ে শয়তান নিজেই অন্ধকারে পালিয়ে যায়।
আমাদের মুখয়বয়ে আগামী ঊষার উদয়কালের নরম আলোর ঝলকানি।
আমাদের মিছিল ভয় ও ধ্বংসের মধ্যে বিশ্রাম নেয়নি, নেবে না।
আমাদের পতাকায় কালেমা তাইয়্যেবা
…,আমাদের এই বাণী কাউকে কোনদিন থামতে দেয়নি
আমরাও থামবো না।
হ্যাঁ ইনশাআল্লাহ আমরা ও থামব না।
লেখক-
রবিউল হাসান তানজিম
শিক্ষার্থী
ইংরেজি বিভাগ,জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়