কৈখালী সহ গোটা জেলায় শীর্ষ চোরাকারবারিরা বহালতবিয়তে নির্বিঘ্নে চালাচ্ছে চোরাকারবার।

মোঃ আলফাত হোসেন সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধিঃ
মাদক ও মাদকাসক্তি বর্তমানে এক জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে।
এখন দেশের মাদকসেবীর বৃহৎ অংশ কিশোর-কিশোরী এবং যুবক-যুবতী।
যে যুব সমাজের ওপর দেশের শিক্ষা-দীক্ষা, উন্নতি, অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ নির্ভরশীল, তাদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ যদি মাদকাসক্তিতে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ে তবে সে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
এ ভয়ঙ্কর অভিশাপ থেকে আমাদের যুবক সমাজকে রক্ষা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সকল প্রকার মাদকদ্রব্য যা নেশা সৃষ্টি করে, সুস্থ মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটায় এবং জ্ঞান ও স্মৃতিশক্তি লোপ করে দেয়, তা ইসলামের দৃষ্টিতে যেমন হারাম এবং রাষ্টীয়ভাবে তা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। লিখছি দেশের দক্ষিণ পশ্চিমের খুলনা বিভাগের সীমান্ত জেলা সাতক্ষীরা।
এ জেলায় সাতটি উপজেলার মধ্যে কলারোয়া, সাতক্ষীরা সদর, দেবহাটা, কালীগঞ্জ ও শ্যামনগর এপাঁচটি উপজেলায় ২৩৮ কিঃ মিঃ এলাকা জুড়ে ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত।
এ দীর্ঘ সীমান্তের বিভিন্ন চোরাপথ দিয়ে অবাধে আসছে মাদক ও অস্ত্র বিনিময়ে পাচার হয়ে যাচ্ছে স্বর্ণ।
এছাড়া অবাধে চলছে রমরমা নারী শিশু পাচার,গরু সহ হুন্ডির কারবার।
আর এসব মাদক, অস্ত্র, মানব পাচার, স্বর্ণ ও হুন্ডি চোরাচালানে জেলা ব্যাপি গড়ে উঠেছে ছোট বড়ো বহু চক্র।
এসব চোরাচালান চক্রের সাথে সম্পৃক্ত ব্যাক্তিরা প্রচুর অবৈধ অর্থ সম্পদের মালিক ও হয়েছেন অল্প সময়ে।
অগাধ অবৈধ অর্থ সম্পদ ব্যবহার করে রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব খাটিয়ে জেলা জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা।
এরই মধ্যে শ্যামনগরের কৈখালী সীমান্তে গত কয়েক মাস আগে কয়েক ধাপে বিজিবি সদস্যরা গরু,রেণু পোনা সহ বিড়ি,গাঁজা আটক করে তবে দুঃখের বিষয় এই সমস্ত চোরাকারবারি অবৈধ মালামাল আটক করলে ও চোরাকারবারিদের আটক করতে সক্ষম হয়নি বিজিবি সদস্যরা,অন্যদিকে কৈখালী কোস্টগার্ড সদস্যরা মাঝে মাঝে মাদকদ্রব্য সহ মাদক কারবারীদের আটক করতে সক্ষম হলে ও আদালত হতে আইনের বিভিন্ন ফাঁকফোঁকড় দিয়ে মুক্তি নিয়ে দিদারছে চালিয়ে যাচ্ছে মাদকের ব্যবসা।
অবৈধ অর্থের বিনিময়ে তারা কেউ সরকার দলীয় রাজনৈতিক, জনপ্রতিনিধি আবার কেউ নামধারী সমাজসেবক ও হয়েছেন। কেউ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দানশীল ব্যাক্তি।
অনেকে আবার নামমাত্র বৈধ ব্যবসার আড়ালে অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে চোরাকারবার।
তথ্য অনুসন্ধানে দেখাগেছে,শ্যামনগরের সুন্দরবন সংলগ্ন কৈখালী ইউনিয়নের পুরো ১৪ কিঃ মিঃ জলসীমা ছাড়াও রমজাননগর, নুরনগর সীমান্ত ছাড়া ও কলারোয়ার ভাদিয়ালি, কেড়াগাছি, কাকডাঙ্গা সীমান্ত। সাতক্ষীরা সদরের ভোমরা, বৈকারি, কুশখালি, তলুইগাছা, ঘুনা, শাখরা, সীমান্ত। দেবহাটার নাংলা, ভাতশালা, খানজিয়া, পদ্মশাখারা সীমান্ত। কালীগঞ্জের বসন্তপুর, হিজলগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে দেদারসে চলছে অস্ত্র, মাদক,মানব পাচার সহ স্বর্ণের চোরাকারবার।
এসব সীমান্তে বিজিবি’র কড়া নজরদারির ফলে মাঝেমধ্যে বড়সড় মাদক, অস্ত্র ও স্বর্ণের চালান আটক হলেও বেশির ভাগ চোরাচালান নির্বিঘ্নে পৌঁছে যায় নির্দিষ্ট গন্তব্যে।
আটক হওয়া চোরাচালানের সাথে গ্রেফতার হয় বহনকারী বা মধ্যস্থতাকারী।
অপরদিকে পর্দার আড়ালে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় চোরাচালানের মূল মালিক বা চোরাচালান চক্রের গডফাদাররা।
হামলা মামলার ভয় না থাকায় কৈখালী ইউনিয়ন সহ সীমান্ত জেলা সাতক্ষীরায় দিনকে দিন বেড়ে চলছে চোরাকারবারি চক্র ও তাদের সদস্য সংখ্যা।
আর নগত টাকা, রুপি বা ডলার হুন্ডি কারবারি চক্র গুলো অনেকটাই স্বাধীন ভাবে চুপিসারে চালিয়ে আসছে তাদের অবৈধ কারবার।
ঠান্ডাঘরে বসে এসব সঙ্ঘবদ্ধ চোরাচালান চক্রগুলো রাজধানী ঢাকাসহ দেশর বিভিন্ন জেলা শহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নির্বিঘ্নে ভারতীয় ভয়ংকর সব মাদক ও অস্ত্রে সয়লাব করে ফেলেছে।
এতে করে দেশে প্রকাশ্যে অস্ত্রবাজী ও মাদকের আগ্রাসন বেড়েছে বহুগুণে।
সমাজের সাধারণ মানুষও জানে তারা চিহ্নিত চোরাকারবারি,আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় তাদের নাম থাকার পরও জেলার শীর্ষ চোরাকারবারা বহালতবিয়তে।
এসব রাষ্ট্র বিরোধী সমাজ বিধ্বংসী চোরাকারবারিদের প্রতিহত করতে সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর এখনি বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন শ্যামনগর উপজেলা-জেলার বহু সচেতন নাগরিক সুধীজন।
এই ওয়েবসাইটের সকল লেখার দায়ভার লেখকের নিজের, স্বাধীন নিউজ কতৃপক্ষ প্রকাশিত লেখার দায়ভার বহন করে না।
এই বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -

সর্বাধিক পঠিত

- Advertisment -