দুমকিতে জনবল স্বর্ণের কোঠায় প্রাণী সম্পদ অফিস

0
57

 

পটুয়াখালী প্রতিনিধি।

 

পটুয়াখালীর দুমকিতে কর্মকর্তা শুন্য অবস্থায় চলছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল। সুবিধাজনক জায়গায় বদলি এবং পর পর দুজন সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার অবসরে চলে যাওয়ায় উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এ দপ্তরটি এখন কর্মকর্তা শুন্য হয়ে পড়েছে। ফলে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের দেড় শতাধিক খামারিসহ গবাদিপশুর চিকিৎসা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন উপজেলাবাসী।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রাণিসম্পদ বিভাগের জনবল কাঠামো অনুযায়ী প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে দুইজন ভেটেরিনারি সার্জন, একজন করে ইয়েলো, কম্পাউন্ডার, ডেটার, অফিস সহায়ক থাকার কথা। পাশাপাশি তিনজন ফ্লিড ভিএসএসসহ মোট ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ থাকলেও দুমকি উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে একজন ভেটেরিনারী সার্জন, একজন কম্পাউন্ডার, দুইজন সহকারী প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা, একজন ডেটা ও একজন অফিস সহায়ক নিয়ে এই দপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছিল।

এদের মধ্যে ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. ইউনুচ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বদলি হয়ে পঞ্চগড় জেলায় চলে গেছেন। ফিল্ড ভিএসএস মোশাররফ হোসেন জানুয়ারিতে এবং মো. শহিদুল ইসলাম জুন মাসে অবসরকালীন ছুটিতে (এলপিআর) চলে যাওয়ায় সরকারি এ গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরটি কর্মকর্তা শুন্য হয়ে পড়েছে।

বর্তমানে শুধুমাত্র অফিস সহায়ক হুমায়ুন কবির একাই অফিসটি দেখাশুনা করছেন। ফলে গত দুইমাস যাবৎ উপজেলার প্রাণিসম্পদ অফিস ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।

উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের দেড় শতাধিক খামারিসহ উপজেলাবাসীর গৃহপালিত গবাদিপশুর চিকিৎসা নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। প্রতিদিন প্রত্যন্ত এলাকা থেকে খামারি ও সাধারণ মানুষ অসুস্থ গবাদিপশু নিয়ে এ হাসপাতালে এসে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ছাড়াই ফেরত যাচ্ছেন। উন্নত জাতের কৃত্রিম প্রজননের আশায় গবাদিপশু নিয়ে হাসপাতালে এসেও ফেরত যেতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। গবাদিপশুর চিকিৎসার জন্য তাদের যেতে হচ্ছে গ্রাম্য পশু চিকিৎসকের কাছে।

এদিকে কর্মকর্তা না থাকার কারণে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত অত্যাধুনিক উপজেলা প্রাণিসম্পদ কমপ্লেক্সটি এখন অফিস সহায়ক নির্ভর হয়ে পড়েছে।

উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীরামপুর গ্রামের খামারি মো. হুমায়ুন কবির হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে সরকারি ভেটেরিনারী সার্জন না থাকায় কোনো চিকিৎসা সেবা পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে গ্রামগঞ্জের হাতুড়ে চিকিৎসকের ওপর ভরসা করতে হচ্ছে। খামারে ১০ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের চারটি ফ্রিজিয়ান গাভীর নিয়মিত স্বাস্থ্য চিকিৎসা নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছি।

একই গ্রামের খামারি মজিবুর রহমান মৃধা জানান, অভিজ্ঞ ডাক্তার না থাকায় তার খামারের বিদেশি উন্নতজাতের চারটি গাভীর চিকিৎসা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছেন। একই অভিযোগ চরবয়েড়া গ্রামের খামারি সাইদ মৃধা ও রাজাখালীর বাসিন্দা মো. ইব্রাহীমের।

জনবল সংকটের সত্যতা স্বীকার করে পটুয়াখালী জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তা সহকারি ভেটেরিনারী সার্জন ডা. মো. জামাল হোসেন বলেন, প্রাণিসম্পদ বিভাগে ভেটেরিনারি সার্জনসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সামগ্রিক সংকটের বিষয়টি সরকার অবগত আছেন। সংকট কাটাতে সরকারের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে।

নিয়োগ সম্পন্ন হলে প্রাণিসম্পদ বিভাগের জনবল স্বাভাবিক হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে তিনি সদ্য যোগদান করেছেন। দুমকি উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের শূন্যপদগুলো দ্রুত পূরণের জন্য এরইমধ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জনবল চেয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।