দেশের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের সর্বোচ্চ সিজিপিএ ধারী দেশসেরা ১৭২ জন মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে “প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক-২০১৮” তুলে দেন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে এই স্বর্ণপদক বিতরণ করেন।
ছাত্রজীবনে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের স্বীকৃতি স্বরূপ ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) এর তিনজন শিক্ষার্থী “প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক” প্রাপ্ত হন এবং এই তিন শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন ফেনীর কৃতি সন্তান ইমরান মাসুদ। তিনি ডুয়েটে তড়িৎ কৌশল অনুষদ থেকে ১ম শ্রেণীতে ১ম স্থান অধিকার করে এ কৃ্তিত্ব অর্জন করেন এবং ২০১৮ শিক্ষাবর্ষে সকল বিভাগের সকল অনুষদের মধ্যে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অর্জন করেন।
ইউজিসির চেয়ারম্যান প্রফেসর কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গণ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য যে, ইমরান মাসুদ এর বাড়ি আমিরগাঁও বাজারের জয়লস্কর ইউনিয়ন, দাগনভূঞা থানার ফেনী জেলাতে। উনার পিতা মরহুম প্রফেসর খাজা আহমদ চট্টগ্রামের ওমরগণি এম ই এস কলেজের ম্যানেজমেন্ট এর অধ্যাপক ছিলেন।
ইমরান মাসুদ বাংলাদেশের একমাত্র তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর পলিটেকনিক ব্যবস্থার সরকারি প্রতিষ্ঠান “ফেনী কম্পিউটার ইনিস্টিটিউট” থেকে ২০১২ সালে ডাটা টেলিকমিউনিকেশন এন্ড নেটওয়ার্কিং টেকনোলজি (ডিএনটি) -তে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন এবং “ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়” -(ডুয়েট) এর কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী অর্জন করেন। ডুয়েটে সি এস ই বিভাগের ১ম শ্রেণীতে ১ম স্থান অধিকার করে ভালো রেজাল্ট এর স্বীকৃতি স্বরূপ মহামান্য রাষ্ট্রপতি থেকে ২০১৮ সালের ২০ই মার্চ স্বর্ণপদক লাভ করেন। এছাড়াও তিনি ইউজিসি মেরিট এওয়ার্ড-২০১৭, পরপর চারবার ডিনস এওয়ার্ড প্রাপ্ত হন। ডুয়েটে ছাত্রাবস্থায় তিনি ডুয়েট কম্পিউটার সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং বেসিস স্টুডেন্ট’স ফোরাম ডুয়েট চ্যাপ্টার এর এক্সিকিউটিভ মেম্বার ছিলেন।
বিএসসি পরবর্তী সময়ে তিনি উত্তরা ইউনিভার্সিটি -তে কিছুদিন শিক্ষকতা করেন। পরবর্তীতে তিনি ডুয়েটে শিক্ষকতা করার জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হন। বর্তমানে তিনি ডুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে শিক্ষকতা করছেন। এছাড়াও তিনি ডুয়েট শিক্ষক সমিতি এর বর্তমান সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ইমরান মাসুদ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পাওয়ার পরের অনুভূতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। এটা ছাত্র-জীবনের সর্বোচ্চ অর্জন ছিলো। এ অর্জনের পেছনে সবচেয়ে বেশি সাপোর্ট পেয়েছি আমার পরিবার ও আমার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আব্বু -আম্মু-বড়ভাইয়া-আপুরা সহ পরিবারের সকল সদস্যের ত্যাগ, আমার প্রাণপ্রিয় শিক্ষকদের কঠিন প্রচেস্টা ও গাইডলাইন এবং আমার সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভালবাসার ফল আজকের এই অর্জন। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন সাথে আমার মরহুম বাবার জন্য ও দোয়া করবেন, বাবাকে গত ২ বছর আগে এই ফেব্রুয়ারি মাসেই হারিয়েছি, আজ উনি থাকলে সবচেয়ে বেশি খুশি তিনিই হতেন।”