
নীলফামারী প্রতিনিধি
বৃষ্টিতে প্রাণ পেয়েছে নীলফামারীর আমন ক্ষেত
ভরা বর্ষায় প্রচণ্ড তাপদাহের পর নীলফামারীতে বৃষ্টির দেখা মিলেছে। বৃষ্টির পানি পেয়ে জমিতে লাগানো আমন ধানের চারা জীবন ফিরে পেয়েছে। পাশাপাশি নতুন চারা রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
স্থানীয়রা জানান, আমন আবাদের শেষ মৌসুমেও বৃষ্টি না হওয়ায় অনেকটা দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন উত্তরের জেলা নীলফামারীর অঞ্চলের মানুষ। শুক্রবার (৪ আগষ্ট) রাতে হঠাৎ মুসলধারে বৃষ্টি নামায় এখন খুশি কৃষকরা।
বৃষ্টিতে প্রাণ পেযেছে আমনের ক্ষেত
জেলা শহরের নিউবাবু পাড়ার বর্গাচাষি সোলাইমান আলী বালু বলেন, ‘শনিবার (৫ আগষ্ট) সকালে ক্ষেতে সেচ দেওয়ার জন্য শ্যালো মেশিন ভাড়ায় ঠিক করে ছিলাম। রাতে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার কারণে মেশিন ভাড়া নিতে হলো না। আল্লাহ আমার খরচটা বাঁচাই দিল।’
সৈয়দপুর বিমান বন্দর আবহাওয়া কার্যালয়ের সিনিয়র অবজারভার (এসও) মঞ্জুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘শুক্রবার রাতে ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এটাই এ মাসের সর্বোচ্চ বৃষ্টি।’
বৃষ্টিতে প্রাণ পেযেছে আমনের ক্ষেত
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গত রাতের টানা বৃষ্টিতে খাল-বিল ও আমনের জমি ভরে গেছে। এতোদিন পড়ে থাকা জমিগুলোতে ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। বৃষ্টির কারণে সেচের খরচ বেঁচে যাবে বলে খুশি তারা।
সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের বাহালী পাড়া গ্রামের কৃষক শ্রী ব্রজেন্দ্র নাথ রায় বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বৃষ্টির পরিমাণ অনেক কম। বৃষ্টি না থাকায় খরচা করে জমিতে সেচ দিয়ে চারা লাগাতে হয়েছিল। রাতে বৃষ্টি হওয়ায় আমরা খুব খুশি।’
জলঢাকা উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নের হরিশ্চন্দ্র পাঠ গ্রামের আনারুল ইসলাম বলেন, ‘পাঁচ বিঘা জমিতে আমন ধান লাগিয়েছি। এ সময় আমন ধানের জন্য বৃষ্টি খুব দরকার। সেচ দিয়ে ধান আবাদ করা খুবই কঠিন। এখন বৃষ্টি হওয়ায় সেচের বাড়তি খরচ থেকে বাঁচা গেল।’
বৃষ্টিতে প্রাণ পেযেছে আমনের ক্ষেত
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নীলফামারীতে চলতি আমন মৌসুমে ১ লাখ ১৩ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে সেচসহ বৃষ্টিতে অর্জিত জমির পরিমাণ ৫০ হাজার ৭৮৫ হেক্টর। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৪২৮ মেট্রিক টন চাল।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. এসএম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল রাতে জেলায় প্রায় ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই বৃষ্টিপাতে কৃষকের সংকট কেটে গেছে। দেরিতে হলেও আশানুরূপ বৃষ্টি হওয়ায় চাষিরা পুরোদমে চারা রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন।’