
ভোলা প্রতিনিধি
ভোলায় গত কয়েক দিনের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও ভারি বর্ষণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে অনেকের পুকুর ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। এ ছাড়াও বৃষ্টির পানি জমে আউশ ধানের ক্ষতি হয়েছে। অপরদিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে মেঘনা নদী উত্তাল থাকায় সোমবার (০৭ আগস্ট) সকাল থেকে ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌ রুট ও চরফ্যাশনের বেতুয়া লঞ্চঘাট থেকে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
টানা বৃষ্টির কারণে শহরের কিছু কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। মেঘনা-তেঁতুলিয়ার পানির বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভোলার মনপুরা উপজেলার বিচ্ছিন্ন চর কলাতলী, কাজীরচর, ঢালচরেসহ হাজিরহাটের দাসেরহাট, চরযতিন, চরজ্ঞান, চরফৈজুদ্দিন, সোনারচর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়াও চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন্ন ঢালচর ও কুকরিমুকরি, মুজিবনগর ইউনিয়নের একাংশ প্লাবিত হয়েছে।
সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের বাঁধের বাইরের এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ সকল এলাকার কয়েক হাজার মানুষ কয়েক দিন ধরে পানিবন্দি রয়েছে।
মনপুরার কলাতলী চরের ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান জানান, কলাতলির চর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ওই চরের বেশির ভাগ পুকুর ও ঘেরের মাছ চলে গেছে।
দৈনিক দুইবার জোয়ারের পানিতে পানিবন্দি থাকে সেখানকার বাসিন্দারা। এতে অনেকের ঘরের চুলাও জ্বলছে না। তারা অর্ধহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।
সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. আমির হোসেন জানান, তাদের এলাকার বেড়িবাঁধের বাইরে প্রায় পাঁচ হাজার লোকের বসবাস। জোয়ার এলেই এ সকল মানুষের ঘরে পানি ওঠে।
রান্নার চুলাও পানিতে ডুবে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন তারা।
ভোলা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মো. মাহবুবুর রহমান জানান, তিন দিন ধরেই ভোলায় ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। রবিবার দুপুর থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত ভোলায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১০৮ মিলিমিটার। সামনে আরো দুই-এক দিন এ রকম ভারি বর্ষণ থাকবে। সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ভারি বর্ষণের কারণে ভোলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়াও কিছু কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ) ভোলা বন্দরের উপপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে মেঘনা নদী উত্তাল থাকায় ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌ রুট ও চরফ্যাশনের বেতুয়া থেকে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এটি সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ কিছুটা কমে আসবে। বাঁধের বাইরে বসবাস করা লোকজন জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোথাও বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।