
মোঃ শান্ত খান ঢাকা জেলা প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সিনেট সভায় মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষকদের অবসরের বয়সসীমা একবছর বাড়ানোর বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে মুক্তিযোদ্ধাদের ‘লুটতরাজকারী’ ও ‘নারী নিপীড়নকারী’ বলে অভিযোগকারী অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও দেশবাসীকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সভাপতি, ও গাণিতিক ও পদার্থবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার সাক্ষরিত এক লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই ক্ষমা প্রার্থনা চাওয়া হয়।
তিনি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন, “মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আমার বক্তব্যের খন্ডিতাংশ পত্রিকা ও বিবৃতিতে প্রকাশিত হয়।”
তার বক্তব্যের ব্যাপারে উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে সিনেট সভায় আমার বক্তব্যকে বিকৃত করে কেউ কেউ প্রচার করছেন। প্রকৃত সত্য এই যে, আমি বলতে চেয়েছি গুরুতর নৈতিক স্খলনের দায়ে অভিযুক্ত কোন শিক্ষককে মহান জাতীয় সংসদের আইন (২০১২) ভঙ্গ করে কোনরূপ সুবিধা দেয়া ঠিক হবে না। অনেক অপরাধী মুক্তযোদ্ধার শাস্তি বর্তমান সরকার নিশ্চিত করেছেন, এমন কিছু উদাহরণই আমি কেবল দিয়েছি। এ উদাহরণ দিতে গিয়ে কিছু সংখ্যক বিপথগামী মুক্তিযোদ্ধা না বলে শুধু মুক্তিযোদ্ধা বলায় আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। কোন অবস্থাই আমি সকল মুক্তিযোদ্ধাদের লুটতরাজকারী ও নারী নিপীড়নকারী বলিনি, বলতে পারিনা, কারণ এসব আমার চেতনা বিরোধী।”
সিনেট সভায় একজন সদস্যও তার বক্তব্যের প্রতিবাদ করেননি বা অধিবেশন সভাপতি/উপাচার্যকে অবহিত করে কার্যপ্রণালী থেকে বাদ দেয়ার দাবি তুলেননি বলেও উল্লেখ করে তিনি।
এছাড়াও লিখিত বিবৃতিতে অজিত কুমার বলেন, ‘দীর্ঘ প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে অধিবেশনটি চলে, উক্ত বিষয়ে নানাবিধ মতামত আসছিলো এবং আমরা প্রায় সবাই ক্লান্ত ছিলাম, তাই আমার বক্তব্যের কোন অংশে সম্মানিত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও দেশবাসী কষ্ট পেয়ে থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবার বিনীত অনুরোধ করছি। আমি আবারও সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি।’
এর আগে শুক্রবার (২৪ জুন) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অধিবেশনের সর্বশেষ আলোচ্যসূচিতে ‘সেশন বেনিফিট বাতিল ও মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষকের চাকরির বয়সসীমা এক বছর বৃদ্ধি বাতিল’ প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার। পরবর্তীতে, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে তার কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য নিয়ে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়।