
বিশেষ রিপোর্ট।
মাত্র ৬টি পুকুর দিয়ে মাছ চাষ শুরু করে ১৫ বছরে তা বাণিজ্যিকরণ করেছেন তিনি। উৎপাদিত রঙিন মাছ বিক্রি হচ্ছে সারাদেশে। সেই সঙ্গে যাচ্ছে বিদেশেও। সফল এ উদ্যোক্তার দেখাদেখি এলাকার অনেকেই এখন রঙিন মাছ চাষে উৎসাহিত হয়েছেন। ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের বারবাড়িয়া ইউনিয়নের সাইফুল ইসলাম মিনু বাহারি রঙের বিদেশী মাছ চাষ করে সফল হয়েছেন।
সাইফুল ইসলাম মিনুর একটি রঙিন মাছের খামার রয়েছে। ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পুকুর ও চৌবাচ্চা রয়েছে খামারে। বিদেশী ও রঙিন মাছ চাষাবাদ করায় প্রতিদিন দর্শনার্থীরাও ভিড় করছেন খামারে। ঢাকা সিটি কলেজ থেকে বি.কম পাস করা মিনু এখন রঙিন মাছ চাষের সফল উদ্যোক্তা।
সাইফুল ইসলাম মিনু বলেন, আমি নব্বইয়ের দশকে গফরগাঁও এলাকার রেণু পোনার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পরিচয় হই। প্রায় ১৬ বছর আগে গফরগাঁওয়ে রঙিন মাছ চাষ শুরু করি। প্রথমে জায়গা ভাড়া নিয়ে ও পরে জমি কিনে বাণিজ্যিকভাবে রঙিন মাছের চাষ শুরু করি। ২০০৭ সালে অ্যাকুয়ারিয়ামের মাছ চাষ শুরু করেন। ওই সময় ক্রেতা কম থাকলেও ভালো দাম পাওয়া যেত। পরে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও চীন থেকে প্রায় ২৪ প্রজাতির মাছ এনে ব্যবসা আরো প্রসারিত করেছি। তারপর জাপান থেকে ছয়টি কই কার্প মাছের পোনা সংগ্রহ করে রেণু উৎপাদনের মাধ্যমে পোনার সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ৩০ বিঘা জমিতে ২৫টি পুকুরে মাছ চাষ করছি। এর মধ্যে রয়েছে ভিয়েতনামের শোলের পোনা, জাপানিজ কই কার্প, ক্যান্ডি প্ল্যাটি, ফান টেইল মিল্কি, বেনি-গই, জেব্রা মেল, গোল্ড ফিশ, কই কার্প, কোহাকো জাপানিজ কই, আলবেনিও শার্ক ১৫-২০ প্রজাতির মাছ। প্রতিদিন ১২ জন শ্রমিক এখানে কাজ করছেন। দেশ-বিদেশের ব্যবসায়ীরা অনলাইনে যোগাযোগ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় রঙিন মাছ কিনে নিয়ে যান। একই সঙ্গে ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই বা কালো মাছির লার্ভাও চাষ করছি।
উপজেলার জ্যৈষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মালিক তানভীর আহম্মেদ বলেন, দেশে রঙিন মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই অনেকেই রঙিন মাছ চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এসব মাছ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। রঙিন মাছ চাষ প্রথম দিকে শৌখিনভাবে হলেও এখন বাণিজ্যিক সম্ভাবনা বেড়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবিদুর রহমান বলেন, রঙিন মাছ শৌখিনভাবে চাষ করা হলেও বর্তমানে তা বাণিজ্যিক রূপ ধারন করেছে। এসব মাছ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। অনেকেই রঙিন মাছ চাষের দিকে ঝুঁকছেন।