রাজবাড়ীর পাংশায় নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে পানি দিয়ে পাট জাগ দেওয়ার চেষ্টা

আলামিন হোসেন শাকির
রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ
চলতি বছর পাটের আবাদ বৃদ্ধি ও পাটের বাম্পার ফলন হওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটলেও পানির অভাবে পাট জাগ দেওয়া (পঁচানো) নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার পাট চাষীরা। পাট জাগ দেওয়ার জন্য চত্রা নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে স্যালো মেশিন ও মটরের সাহায্যে পানি দিয়ে পাট জাগ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এতে খরচ বাড়ার দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এ বছর উপজেলায় ১২ হাজার ৯৩৭ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে যা আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি। উপজেলায় এবার ৩৪ হাজার ৬৭১ মেট্রিকটন পাট উৎপাদনের আশঙ্কা করছেন কৃষি বিভাগ।
বৃষ্টি না হওয়ায় খাল-বিলসহ বিভিন্ন ডোবা ও নালায় পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। পাট কেটে ফেলে রেখেছেন কিন্তু পানির অভাবে জাগ দিতে পারছেন না। আবার অন্যদিকে জমিতেই মরতে শুরু করেছে পাট। সব মিলিয়ে এবার পাট নিয়ে মহা বিপদে রয়েছেন এই উপজেলার চাষীরা।
রোববার (২৪ জুলাই) উপজেলার মৌরাট ইউনিয়নের পশ্চিম বাগদুলী খেয়া ঘাট ও মুচিদাহ গ্রামে গিয়ে দেখা যায় চত্রা নদীর উপর বাঁশ খুঁটি ও মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মা করছেন এলাকার চাষীরা। তারা বলছেন এই চত্রা নদী গড়াই নদীর সাথে মিশে গেছে। বৃষ্টি আসলে যতটুকু পানি জমাট বাঁধে এই নদীতে তা আবার গড়াই নদীতে নেমে যায় ফলে এখানে পানি জমে থাকে না। তাতেও সম্ভব হচ্ছে না পাট জাগ দেওয়ার।
বাগদুলী গ্রামের কৃষক রতন মন্ডল বলেন, আমাদের এই চত্রা নদীর উপর বালিয়াকান্দি উপজেলার নাড়ুয়া গ্রামে একটি সুইচ গেট আছে যা কখনো আমাদের কাছে আসে না। যখন পানি প্রয়োজন ওই সুইচগেট বন্ধ রেখে সুষ্ঠুভাবে পানি বন্টন করলে আমাদের এত ভোগান্তি পোহাতে হবে না। এই সুইচ গেটের বিষয়ে প্রশাসনের সুনজর প্রয়োজন। তাই আমরা বাধ্য হয়ে নদীতে বাঁধ দিয়ে স্যালো মেশিন ও মটরের সাহায্যে পানি দিচ্ছি।
মুচিদাহ গ্রামের কৃষক লুকমান সরদার জানান, উপর মহলের কাছে সমস্যার কথা বললে তারা প্রকৃতির দোহাই দিয়ে আমাদেরকে তাড়িয়ে দেয়। তারা কখনো বৃষ্টির পানি আটকানোর জন্য চেষ্টা করে না। আমাদের এই নদীতে দুটি সুইচগেট রয়েছে নামে মাত্র কিন্তু কখনো কাজে আসেনি। সময়মতো সুইচ গেট বন্ধ রাখলে আমাদের পানির অভাব হতো না। আর আমরা পাট নিয়ে এভাবে বিপদে পড়তাম না। তাই আমরা বাধ্য হয়ে নদীতে বাঁধ নির্মাণ করছি।
এই ওয়েবসাইটের সকল লেখার দায়ভার লেখকের নিজের, স্বাধীন নিউজ কতৃপক্ষ প্রকাশিত লেখার দায়ভার বহন করে না।
এই বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -

সর্বাধিক পঠিত

- Advertisment -