
উৎফল বড়ুয়া, ব্যুরো প্রধান, সিলেট
সিলেট আবারও দ্বিতীয়ধাপে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কিছুপরিবারের মাঝে মানবিক উপহার দিলেন
বাংলাদেশী বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম দিকপাল, বহু জনহিতকর প্রতিষ্ঠানের জনক, “CANADA: A MINDFUL AND KIND NATION “এর প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট, THE URBAN BUDDHIST MONK, শ্রীলংকায় রাজকীয় মহাপান্ডিতা উপাধিতে ভুষিত, টরেন্টো ওহ্যামিল্টন ম্যাক মাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যিনি বুড্ডিজম ও মনোবিজ্ঞানের উপর অনার্সসহ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন,অন্টারিও সরকার কানাডা কর্তৃক স্প্রিন্ট এর্ডওয়াডে ভুষিত,ঐ দুইটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বুড্ডিজম ও মনোবিজ্ঞানের উপর পি এইচ ডি ডিগ্রি অর্জন, কানাডা সরকার কর্তৃক শান্তির দূত উপাধিতে ভূষিত, বাংলাদেশ ভিক্ষু মহাসভা কর্তৃক শান্তিধূত উপাধিতে ভূষিত, বাংলাদেশ ভিক্ষু প্রশিক্ষণ ও সাধনা কেন্দ্র হতে ধর্মদূত উপাধি প্রাপ্ত, কানাডা সরকার কর্তৃক পিস কমিটির কো-চেয়ারম্যান নির্বাচিত, শ্রীলংকা, জাপান, ভিয়েতনাম, আমেরিকা, আফ্রিকা ,মেক্সিকো, মালয়েশিয়া, লন্ডন ও রাশিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক সন্মানে ভূষিত, ইউরোপ আফ্রিকসহ ল্যাটিন আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট লেকচারার, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম অগ্রদূত ডক্টর শরণপাল মহাস্থবির মহোদয় সিলেটে বানভাসি পানিবন্দী অসহায় মানুষের পাশে মানবিক উপহার নিয়ে এগিয়ে এসে দাঁড়ান।
শ্রদ্ধেয় ভিক্ষু. ড.শরণপাল মহাথের সিলেটের বানভাসি পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ লাগবের নিমিত্তে ‘ধম্মকথা’ বৌদ্ধ অনলাইন মুখপত্র এর পরিচালক, মানবতার ফেরিওয়ালা, স্বাধীন নিউজ সিলেট ব্যুরো প্রধান উৎফল বড়ুয়ার আহবানে সাড়া দিয়ে মানবিক উপহার নিয়ে এগিয়ে এসে সিলেট সুনামগঞ্জের বানভাসি পানিবন্দী মানুষের মাঝে। তারই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয়ধাপে শুক্রবার ৮ জুলাই ২০২২ মোগলা বাজার এলাকায় বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত কিছু মানুষের মাঝে তাদের পরিবারের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী মানবিক উপহার হিসেবে বিতরণ করা হয়।
বিতরণ কাজে প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেট চট্টগ্রাম ফেন্ডশীপ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্টাতা আহবায়ক শহিদুল ইসলাম, উদ্বোধক ছিলেন সিলেট চট্টগ্রাম ফেন্ডশীপ ফাউন্ডেশনের যুগ্ম আহবায়ক, মানবতার ফেরিওয়ালা সাংবাদিক উৎফল বড়ুয়া, সদস্য আব্দুল মালেক, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে সোহেল আহমদ, শোয়েব আহমেদ,খালেদ আহমেদ প্রমুখ।
শুধু তাই নয় যিনি করোনা কালীন সময় সিলেটের গরীব, অসহায়, প্রতিবন্ধী এবং শীতকালে শীতার্ত মানুষের মাঝে মানবিক উপহার, শিক্ষা ক্ষেত্রে শিক্ষা সামগ্রী নিয়ে এগিয়ে এসে পাশে ছিলেন এখনো আছেন।
ড. শরণপাল ভিক্ষুর সংক্ষিপ্ত পরিচিতিঃ রাঙ্গুনিয়া থানার মধ্যম পোমরা গ্রামের সম্ভ্রান্ত বৌদ্ধ পরিবারে সংঘপিতা স্বর্গীয় পুলিন বিহারী বড়ুয়া, সংঘমাতা স্বর্গীয়া দীপ্তি বড়ুয়ার ঘরে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি পিতা-মাতার চতুর্থতম সন্তান।
কৈশোর বয়সে রাউজানের কদলপুরস্থ বাংলাদেশ ভিক্ষু প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে উপ-সংঘরাজ ড. জ্ঞানশ্রী মহাস্থবির, বাংলায় ত্রিপিটক অনুবাদের অন্যতম পুরোধা, বাংলাদেশ ভিক্ষু প্রশিক্ষণ ও সাধনা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক পন্ডিত প্রজ্ঞাবংশ মহাথেরো এবং বাংলাদেশ ভিক্ষু প্রশিক্ষণ ও সাধনা কেন্দ্রের পরিচালক ভদন্ত ভিক্ষু এইচ. সুগতপ্রিয় মহোদয়ের তত্বাবধানে শ্রীলংকার প্রসিদ্ধ মহারাগামা ভিক্ষু ট্রেনিং সেন্টারে পালি, ধর্ম-বিনয় শিক্ষার জন্য গমন করেন এবং তথায় বিশ্বনন্দিত মহারাগামা ভিক্ষু ট্রেনিং সেন্টারের নায়কা ভান্তে সর্বপূজ্য আমপিথিয়া শ্রী রাহুলা মহাথেরোর সান্বিধ্যে থেকে বৌদ্ধ ধর্মের উপর উচ্চতর পি.এইচ,ডি ডিগ্রী লাভ করেন।
শৈশবে বৌদ্ধ প্রতিরূপদেশ শ্রীলঙ্কা গমন এবং দীর্ঘদিন ধরে তথায় অধ্যয়ন শেষে বৌদ্ধ শাস্ত্রে পান্ডিতা ডিগ্রী লাভ করে উচ্চ শিক্ষা ও ধর্ম প্রচার মানসে কানাডায় পাড়ি দেন। তিনি হামিল্টন কেনেডাস্থ টরোন্টো বিশ্ববিদ্যালয় এবং ম্যাক মাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর সহ পি এইচ ডি ডিগ্রি লাভ করেন।
কানাডা বিশ্বের শান্তিপূর্ণ ও ঐশ্বর্যপূর্ণ দেশগুলোর অন্যতম। এখানে ভোগ বিলাসে সদা পরিপূর্ণ। ডঃ শরণপাল থের সমস্থ ঐশ্বর্য ও ভোগবিলাসকে পদদলিত করে জাগতিক সুখের খোজে ভোগবিলাসে মত্ত মানুষকে প্রকৃত সুখ লাভের শিক্ষা বুদ্ধের আয্য অস্টাঙ্গিক মার্গ, চতুরায সত্য ও বিদর্শন শিক্ষা দিয়ে চলেছেন।
আমাদের দেশের অনেক ভিক্ষু এভাবে দেশের বাইরে ধর্মের প্রচার পাশাপাশি মানবিক কাজে নিয়োজিত ছিলেন ও আছেন। তাঁদের মাধ্যমে বিদেশের মাটিতে আমাদের দেশ এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায় গৌরবনীয় হচ্ছে।
ড. ভান্তে কানাডিয়ান সহ বিভিন্ন দেশের মানুষদের বিদর্শন শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষাও দিয়ে চলেছেন। ধর্ম স্কুলের মাধ্যমে স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রী সহ সকল বয়সের মানুষদের নিয়মিত ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করে যাচ্ছেন। এটা সত্যিই বাঙালি বৌদ্ধদের জন্য গৌরবের।
তিনি মানব কল্যাণে দেশ-জাতি-সমাজের উন্নয়নে কানাডায় প্রাপ্ত দান স্বদেশের বিভিন্ন সেবামূলক কাজে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা,ঢাকা ও উত্তর বঙ্গসহ বিভিন্ন জায়গায় শতাধিক বিহার নির্মাণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মান, মাসিক শতাধিক গরীব শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার খরচ, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের গরীব দুঃখী মানুষের মেয়ের বিয়ে, বৌদ্ধতীর্থ দর্শন করানোসহ জাতির উন্নয়নে তাঁর মানবিক সেবাকর্ম চলমান রেখেছেন।
মানবতাবাদী বৌদ্ধ সন্যাসী তাঁর জীবন উৎসর্গীত করেছেন আত্মমানবতার সেবায় ।
গত করোনা কোভিড ১৯ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় তিনি অসম্প্রদায়িক চেতনায় মাতৃভূমির অসহায়-দরিদ্র বৌদ্ধ, মুসলিম ও হিন্দু পরিবারে মানবিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন। সকল ধর্মালম্বী মানুষের সেবায় এগিয়ে আসেন। তারই ধারাবাহিকতায় কানাডা থেকে মানুষের এই দুঃসময়ে নিজ জন্মভূমি বাংলাদেশ, নেপাল, ভারত, শ্রীলংক্ষা, ইন্দোনেশিয়া, আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশের অসহায় পরিবারের মধ্যে নগদ টাকা, অক্সিজেন সিলিন্ডার, ঔষধ, চিকিৎসা সেবা, চাল, ডাল, তেল, আলুসহ বিভিন্ন ধরণের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদী দান অব্যাহত রেখেছেন।
তিনি বর্তমানে কানাডা টরেন্টোত শ্রীলংকান বৌদ্ধ মন্দিরে অবস্থান করে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার ও প্রসারে এবং জাতিধর্ম নির্বিশেষে নিরলসভাবে মানবিক কাজ করে যাচ্ছেন।