ইসলাম ডেস্ক |
আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে অনেক আমলকে সৎকর্মশীল হওয়ার উপায় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কেয়ামতের ময়দানে একশ্রেণির মানুষ সৎকর্মশীল বান্দায় পরিণত না হতে পারায় আফসোস করবে আর আরো সময় চাইবে। এসব মানুষ কারা; যারা ‘সৎকর্মশীল’ হওয়ার ব্যাপারে আফসোস করে পুনরায় অবকাশ চাইবে?
হ্যাঁ, আল্লাহর দেওয়া জীবিকা থেকে সাদকা বা দান করাই সৎকর্মশীল বান্দা হওয়ার অন্যতম উপায়। কিন্তু তা কীভাবে সে বিষয়টি কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা এভাবে উপস্থাপন করেছেন-
وَ اَنۡفِقُوۡا مِنۡ مَّا رَزَقۡنٰکُمۡ مِّنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّاۡتِیَ اَحَدَکُمُ الۡمَوۡتُ فَیَقُوۡلَ رَبِّ لَوۡ لَاۤ اَخَّرۡتَنِیۡۤ اِلٰۤی اَجَلٍ قَرِیۡبٍ ۙ فَاَصَّدَّقَ وَ اَکُنۡ مِّنَ الصّٰلِحِیۡنَ
‘তোমাদের কারো মৃত্যু আসার আগে আমি তোমাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে তোমরা ব্যয় কর। (অন্যথা মৃত্যু এলে সে বলবে) ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে আরো কিছু কালের জন্য অবকাশ দিলে না কেন? তাহলে আমি সাদাকা করতাম এবং সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।’ (সুরা আল-মুনাফিকুন : আয়াত ১০)
সুতরাং মহান আল্লাহ তাআলার সৎকর্মশীল বান্দা হওয়ার উপায়গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো দান-সাদকা করা। আয়াতে এ দান-সাদকা দ্বারা উদ্দেশ্য কি শুধু দান করা। নাকি অন্য কিছু?
এখানে জীবিকা থেকে ব্যয় করার অর্থ হলো- জাকাত আদায় করা এবং অন্যান্য কল্যাণকর পথে দান করা। সুতরাং আর্থিক ইবাদত জাকাত আদায়, আল্লাহর পথে ব্যয় এবং হজ করার সামর্থ্য হলে তা সম্পাদন করার ব্যাপারে বিলম্ব করা কোনোভাবেই ঠিক নয়।
কারণ, মৃত্যু কখন এসে পড়বে, তার কোনো ঠিক নেই? ফলে এই ফরজ (জাকাত, ব্যয় ও হজ) কাজগুলো আদায় করতে না পারলে তার উপর তা অনাদায় রয়ে যাবে।
এগুলো যথাথভাবে আদায় না করে থাকলে মৃত্যুর সময় তা আদায়ের ব্যাপার শুধু শুধু আফসোস করায় বা তা আদায় করার আশাবাদ ব্যক্ত করায় কোনো লাভ হবে না।
আল্লাহর পথে দান করা সম্পর্কে প্রিয় নবি কী বলেছেন?
এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, কোন সদকায় সর্বাধিক সওয়াব পাওয়া যায়?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘যে সাদকা সুস্থ অবস্থায় এবং ভবিষ্যতের দিকে লক্ষ্য করে অর্থ ব্যয় করে ফেললে নিজেই দরিদ্র হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে; সে অবস্থায় করা হয়।’
তিনি আরও বললেন, ‘আল্লাহর পথে ব্যয় করাকে সেই সময় পর্যন্ত বিলম্বিত করো না। যখন আত্মা তোমার কণ্ঠনালীতে এসে যায় এবং তুমি মরতে থাক আর বল- এই পরিমাণ অর্থ অমুককে দিয়ে দাও, এই পরিমাণ অর্থ অমুক কাজে ব্যয় কর।’ (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)
মুমিন মুসলমানের উচিত, যাদের সম্পদ আছে, তাদের জাকাত ও হজের মতো আর্থিক ফরজ ইবাদতগুলো যথাযথভাবে পালন করা। মৃত্যুর সময় আসার আগেই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দান-সাদকা করা। আর্থিক অভাব-অনটনের সময় বেশি বেশি দান-সাদকা করা। আর এতেই মানুষ হয়ে ওঠে সৎকর্মশীল।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ফরজ আথির্ক ইবাদত পালনের পাশাপাশি বেশি বেশি দান সাদকা করার তাওফিক দান করুন। কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী দান-সাদকা করার তাওফিক দান করুন। দান-সাদকার মাধ্যমে নিজেকে সৎকর্মশীল বান্দায় পরিণত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।