হজ-কোরবানির চেতনা ও আমল

ইসলাম ডেস্ক |

হজ, ঈদুল আজহা, কোরবানির পরও মহান আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণায় উজ্জীবিত থাকে মুমিন। জিলহজের প্রথম দশকের নির্ধারিত দিনগুলোতে তাওহিদ বা একত্ববাদের চেতনা ও আমল হলো একনিষ্ঠিভাবে তাকবিরে তাশরিক এবং তালবিয়া। হজ পালনকারী পড়েন তালবিয়া ও তাকবির আর বিশ্বব্যাপী কোরবানিদাতাসহ মুমিন মুসলমান তাকবিরের আমলে থাকে উজ্জীবিত।

মুমিন মুসলমান কোরবানির পর ১৩ জিলহজ আসর পর্যন্ত তাকবিরে তাশরিক পড়তে থাকেন। আবার যারা হজ ও ওমরায় থাকেন; তারা তালবিয়া পড়তে থাকেন। ঈদুল আজহা ও কোরবানি শেষ হলেও চলতে থাকে তাওহিদের ও আল্লাহর দরবারে উপস্থিতির এ সাক্ষ্য।

মুমিন মুসরমান ১৩ জিলহজ পর্যন্ত তাওহিদের এ ঘোষণা দিতে থাকে-

اَللهُ اَكْبَر اَللهُ اَكْبَر لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَ اَللهُ اَكْبَر اَللهُ اَكْبَر وَ للهِ الْحَمْد

উচ্চারণ : ’আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার; ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’

অর্থ : ’আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; সব প্রশংসা মহান আল্লাহ জন্য।’

৯ জিলহজ থেকে ১৩ জিলহজ আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর একবার এ তাকবির পড়া মুমিন মুসলমানের ওপর ওয়াজিব বা আবশ্যকও বটে। হাদিসে পাকে জিলহজে বেশি বেশি তাকবির পড়ার প্রতিও তাগিদ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, জিলহজ মাসের প্রথম দশকে তোমরা বেশি বেশি তাকবির (আল্লাহু আকবার), তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ও তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ) বলবে।’ (মুসনাদে আহমাদ)

হজ ও ওমরায় তালবিয়া

আবার পবিত্র নগরী মক্কা, মিনা, আরাফাহ, মুজদালিফায় হজে অংশগ্রহণকারী ও অবস্থানকারীরা তালবিয়া পড়েই আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হওয়ার কথা জানান দেয়। তাহলো-

لَبَّيْكَ اَللّهُمَّ لَبَّيْكَ

لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ

اِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ

لاَ شَرِيْكَ لَكَ

তালবিয়ার উচ্চারণ

> লাব্বাইকা আল্লা-হুম্মা লাব্বাইক,

> লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক,

> ইন্নাল হামদা ওয়ান্‌নিমাতা লাকা ওয়ালমুল্‌ক,

> লা শারিকা লাক।

তালবিয়ার অর্থ

> আমি হাজির, হে আল্লাহ! আমি উপস্থিত!

> আপনার ডাকে সাড়া দিতে আমি হাজির। আপনার কোনো অংশীদার নেই।

> নিঃসন্দেহে সব প্রশংসা ও সম্পদরাজি তথা নেয়ামত আপনার এবং একচ্ছত্র আধিপত্যও আপনার।

> আপনার কোনো অংশীদার নেই।

সুতরাং জিলহজ মাস শুরু হওয়ার থেকে ইয়াওমে আরাফা (হজ), ঈদ ও কোরবানি শেষ হলেও চলতে থাকে তাকবিরে তাশরিক ও তালবিয়া। যা মুসলিম উম্মাহর ঈমান ও আমলে উজ্জীবিত হওয়ারই অংশ। যে যতবেশি এগুলো পালন করবে, পাঠ করবে ঈমানি চেতনা ও মূল্যবোধে ততবেশি অগ্রসহর হবে।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, জিলহজের বাকি দিনগুলোও তাকবির- তালবিয়া পড়ার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে একত্ববাদের চেতনাকে আরও বেশি উজ্জীবিত রাখা। শিরক ও কুফরের সব চিহ্ন থেকে পরিচ্ছন্ন থাকা। ব্যক্তি পরিবার সমাজ তথা সর্বস্তরে শিরকমুক্ত চেতনায় তাকবির ও তালবিয়ার আমল বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিজেদের উজ্জীবিত রাখা ঈমানের একান্ত দাবি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জিলহজ মাসের এ দিনগুলোতে তাকবির-তালবিয়া পাঠের চেতনায় মজবুত ঈমানের অধিকারী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এই ওয়েবসাইটের সকল লেখার দায়ভার লেখকের নিজের, স্বাধীন নিউজ কতৃপক্ষ প্রকাশিত লেখার দায়ভার বহন করে না।
এই বিভাগের আরও খবর
- Advertisment -

সর্বাধিক পঠিত

- Advertisment -