ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইউরোপীয় তিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে জেনেভায় যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে তা দুই ঘণ্টা চলার কথা থাকলেও প্রায় তিন ঘণ্টা স্থায়ী হয়। কিন্তু বৈঠক শেষে মনে হয়নি দুই পক্ষের অবস্থান খুব একটা কাছাকাছি এসেছে।
ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি সাংবাদিকদের উদ্দেশে একটি বিবৃতি পড়ে শোনান। ইসরাইলি হামলার বিষয়ে ইরানের জোর অবস্থানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, যতদিন হামলা চলবে, ততদিন কোনো চুক্তি সম্ভব নয়।
এরপর তিনি বলেন, তিনি আশা করছেন শিগগিরই আবার যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করতে পারবেন।
এর জবাবে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি, যিনি তিনটি ইউরোপীয় দেশের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন, তিনি চলমান পরিস্থিতিকে ‘বিপজ্জনক’ বলে অভিহিত করেন এবং ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কথা বলার বিষয়ে জোর পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ইউরোপ এই ধরনের আলোচনার পথ সহজ করতে প্রস্তুত।
ল্যামি আরো বলেন, ইউরোপের অবস্থানও যুক্তরাষ্ট্রের মতোই- ইরানে পারমাণবিক ‘শূন্য সমৃদ্ধকরণ’। অর্থাৎ ইরানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। এটি এমন একটি বিষয়, যেটি ইরান সব সময় তার ‘রেড লাইন’ বা শেষ সীমা বলে এসেছে।
ল্যামি বলেন, ইউরোপ ইরানের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে সাহায্য করতে চায়।
ইউরোপীয়দের বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট যে তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সংঘাত শুরু হওয়ার আশঙ্কাকে খুব গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে দুই সপ্তাহের কূটনৈতিক সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন, সেটাও তারা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে। কিন্তু তারা জানে, এই সংকট থেকে কূটনৈতিকভাবে বেরিয়ে আসার একমাত্র উপায় তেহরান ও ওয়াশিংটনের একসাথে এগিয়ে আসা।
শুধু ইরানের সাথে চুক্তি করেই কিছু হবে না, যদিও ইরানি কূটনীতিকেরা সেটি উপেক্ষা করছেন বলে মনে হচ্ছে। সার্বিকভাবে মনে হচ্ছে, ব্শ্বি আরেক দফা ‘আলোচনা নিয়ে আলোচনার’ সাক্ষী হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই মুহূর্তে যখন বোমা বর্ষণ, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও সময়সীমার চাপ চলছে, এমন অবস্থায় সময় নষ্ট করে আসলে লাভ কার?
সূত্র : বিবিসি