Swadhin News Logo
রবিবার , ২২ জুন ২০২৫ | ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. আন্তর্জাতিক
  2. কৃষি ও প্রকৃতি
  3. ক্যাম্পাস
  4. খেলাধুলা
  5. চাকরি
  6. জাতীয়
  7. জোকস
  8. তথ্যপ্রযুক্তি
  9. দেশজুড়ে
  10. ধর্ম
  11. নারী ও শিশু
  12. প্রবাস
  13. বই থেকে
  14. বিজনেস
  15. বিনোদন

ইসরাইল কেন দ্রুত ইরান যুদ্ধ শেষ করতে চায়

প্রতিবেদক
Nirob
জুন ২২, ২০২৫ ১:০৬ পূর্বাহ্ণ
ইসরাইল কেন দ্রুত ইরান যুদ্ধ শেষ করতে চায়

ইরান যুদ্ধে ইসরাইলকে প্রতিদিন শত শত মিলিয়ন ডলার খরচ করতে হচ্ছে। এতে তাদের দীর্ঘমেয়াদে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা সীমিত হয়ে আসছে।

মার্কিন সাময়িকী ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে বলেছে, ইরানের মিসাইল হামলা প্রতিরোধ করতে ইসরাইলের অনেক ব্যয় হয়। অঙ্কটা দশ মিলিয়ন থেকে নিয়ে ২০০ মিলিয়ন পর্যন্ত পৌঁছিয়ে যায় বলে সমরবিদদের ধারণা। এছাড়া নিজেদের হামলা পরিচালনা করা, যুদ্ধাস্ত্র ও যুদ্ধবিমানের ব্যবহারে খরচ বহন করা, ক্ষতিগ্রস্থ স্থাপনা মেরামতসহ আরো নানা দিকে বড় ধরনের ব্যয় মেটাতে হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এ পর্যন্ত ইরানি হামলায় ইসরাইলের যে ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে অন্তত ৪০০ মিলিয়ন ডলার খরচ লাগবে।

ইসরাইলি কর্মকর্তারা বলছেন, এই যুদ্ধ আরো দুই সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার সামরিক অভিযানের সকল লক্ষ্য অর্জন করতে চান; যার মধ্যে রয়েছে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন এবং অস্ত্রাগার নির্মূল করা।

উল্লেখ্য, গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত নেতানিয়াহুকে খুঁজছে।

ব্যাংক অফ ইসরাইলের সাবেক গভর্নর এবং বর্তমানে ইসরাইল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো কার্নিট ফ্লুগ বিশ্বাস করেন যে যুদ্ধের প্রকৃত ব্যয় নির্ধারণটা নির্ভর করে আর কতদিন যুদ্ধ চলমান থাকবে, তার উপর। যুদ্ধ যদি এক সপ্তাহ ধরে চলে, তাহলে ব্যয় এক রকম। যদি দুই সপ্তাহ কিংবা মাসখানেক দীর্ঘ হয়, তাহলে তার ব্যয় আরো বেশি হবে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের তেল আবিব সংবাদদাতা আনাত পেলেদ বলেন, ‘ইরান এক সপ্তাহে ইসরাইলে ৪০০টিরও বেশি মিসাইল নিক্ষেপ করেছে।’

তিনি আরো বলেন, এসব মিসাইল প্রতিহত করার জন্য ইসরাইল নিযুক্ত করেছে ডেভিডস স্লিং। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে তৈরি করেছে। এটি যুদ্ধবিমান থেকে শুরু করে স্বল্প ও দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ধ্বংস করতে পারে। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ আরো কিছু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে ইরানি মিসাইলের মোকাবেলা করা হয়েছে।

তেল আবিব-ভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজের গবেষক ইয়েহোশুয়া কালিস্কি বলেন, ডেভিডস স্লিং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা একবার সক্রিয় করার জন্য ইসরাইলকে ৭ লাখ ডলার খরচ করতে হয়।

তিনি আরো বলেন, এছাড়া ইসরাইলি ভূখণ্ড থেকে প্রায় ১,৬০০ কিলোমিটার দূরে কয়েক ডজন যুদ্ধবিমান ঘণ্টার পর ঘণ্টা আকাশে প্রস্তুত রাখা হয়। এর মধ্যে এফ-৩৫-এর মতো যুদ্ধবিমান রয়েছে। এসব আকাশে প্রস্তুত রাখার জন্য বিপুল খরচ করতে হয়।

কালেস্কি বলেন, প্রতিটি বিমান আকাশে উড্ডয়নের জন্য ঘণ্টায় প্রায় ১০ হাজার ডলার খরচ করতে হয়। এছাড়া জ্বালানি ও অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্রের বিবেচনায় তা আরো বাড়তে পারে। যেমন জয়েন্ট ডাইরেক্ট অ্যাটাক মিনিশন (জেডিএএম) এবং এমকে-৮৪-এর মতো ভারী বোমা বহনে খরচটা আরো বেড়ে যায়।

ইসরাইলের রেইচম্যান বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যারন ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিক পলিসির প্রধান জভি একস্টেইন বলেছেন যে ইরানের সাথে যুদ্ধের দৈনিক খরচ গাজা উপত্যকায় বা লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধের খরচের চেয়ে অনেক বেশি হবে।

অ্যারন ইনস্টিটিউটের অনুমান অনুসারে, ইরানের সাথে এক মাসের যুদ্ধে প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে। যদিও একস্টাইন বলেছেন যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইলি সামরিক ব্যয় বেড়েছে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জোর দিয়ে বলেছে যে ইরানি হামলায় ইসরাইলি অর্থনীতির বৃহৎ ক্ষেত্রগুলো সম্প্রতি স্থবির হয়ে পড়েছে। শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় শিল্পগুলোকে কাজে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বর্তমানে রেস্তোরাঁর মতো অনেক ব্যবসাও বন্ধ হয়ে গেছে।

প্রকৌশলীরা নিশ্চিত করেছেন যে ইরানের বৃহৎ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের কারণে সৃষ্ট ধ্বংস সাম্প্রতিক দশকগুলোতে ইসরাইলের যুদ্ধে দেখা যায়নি।

বেসামরিক অবকাঠামোর ক্ষতি মূল্যায়নের জন্য ডেকে আনা একজন স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার ইয়াল শালেভ বলেছেন যে শত শত ভবন ধ্বংস হয়েছে। অনেকগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবন পুনর্নির্মাণ বা মেরামত করতে কয়েক শ’ মিলিয়ন ডলার খরচ হবে।

তিনি অনুমান করেছিলেন যে ইরানি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মধ্য তেল আবিবের একটি নবনির্মিত আকাশচুম্বী ভবন মেরামত করতে কমপক্ষে কয়েক মিলিয়ন ডলার খরচ হবে।

সূত্র : ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল/আল জাজিরা

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক