খুলনার ফুলতলা উপজেলার জামিরা বাজারে চাঁদাবাজির অভিযোগে গণপিটুনিতে আলমগীর হোসেন রানা (৩৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। তাকে বাড়ি থেকে ধরে এনে গণপিটুনি দেওয়া হয়। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকালে এ ঘটনা ঘটে।
চাঁদাবাজির ঘটনার প্রতিবাদে জামিরা বাজারের দোকানপাট বন্ধ করে ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী ফুলতলা-শাহাপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। জামিরা বাজার ও আশপাশ এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, শনিবার বিকাল ৩টার দিকে তিনটি মোটরসাইকেল যোগে ৫-৬ জন মুখোশধারী জামিরা বাজারের দুটি দোকানে চাঁদা দাবি করে হুমকি দিয়ে চলে যায়। এরপর জামিরা বাজারের মাদ্রাসা রোডে জামিরা বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির মোল্যাকে খুঁজতে থাকে এবং জীবননাশের হুমকি দিয়ে গালিগালাজ করে। ঘটনার সময় হুমায়ুন কবির জামিরার মাছবাজার আড়তে ছিলেন। খবর পেয়ে তার অনুসারীরা দোকানপাট বন্ধ করে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন।
বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পার্শ্ববর্তী টোলনা গ্রামের বাড়ি থেকে আলমগীর হোসেন রানাকে ধরে জামিরা চৌরাস্তা মোড়ে নিয়ে গণপিটুনি শুরু করে। খবর পেয়ে ফুলতলা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। এ সময় আলমগীরের স্ত্রী-পুত্র তাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করতে থাকেন। এ অবস্থায় তিনি কথা বলে উঠলে পুলিশের সামনে ফের তাকে গণপিটুনি শুরু করে। পরে সেনাবাহিনী সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ফুলতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জেল্লাল হোসেন বলেন, ‘বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে আলমগীর হোসেন রানাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি পার্শ্ববর্তী ডুমুরিয়া উপজেলার টোলনা মাঝেরপাড়া গ্রামের হায়দার মোল্যার ছেলে।’
সূত্রে জানা গেছে, নিহত আলমগীর হোসেন রানা একসময়ে মাছের ব্যবসা করতেন। মাছ কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে বিরোধের সৃষ্টি হয়। যে কারণে ওই আড়তে আলমগীরের মাছ কেনা বন্ধ হয়ে যায়। যদিও আড়তদার এ অভিযোগ অস্বীকার করেন।