গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় এক গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় যুবদল নেতা মশিউর রহমানসহ তিন জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়েছে। ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, মশিউর রহমান ও তার সহযোগী জব্বারুল ইসলাম এবং আরেক অপরিচিত ব্যক্তি তাকে ধর্ষণ করেছে।
গত শনিবার রাতে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এর আগে ১৯ অক্টোবর রাতে উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
মামলার আসামিরা হলো- তালুককানুপুর ইউনিয়নের মৃত দুদু মিয়ার ছেলে মশিউর রহমান রাঙ্গা (৪৩), তার সহযোগী একই এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে জব্বারুল ইসলাম (১৯) এবং অপরিচিত আরেকজন। এর মধ্যে মশিউর রহমান রাঙ্গা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বলে জানা গেছে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে মশিউর রহমানের মোবাইল নম্বরে কয়েকবার কল দিয়ে বন্ধ পাওয়া যায়। এ ছাড়া বিষয়টি নিয়ে উপজেলা যু্বদলের নেতারাও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরই মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে। তবে ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক। পুলিশ তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, মশিউর রহমান আগে থেকেই ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন সময়ে খারাপ প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। গত ১৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০টার দিকে মশিউর রহমান ও জব্বারুল ইসলাম ভুক্তভোগীর বাড়িতে এসে তার স্বামীকে ডাকাডাকি করেছিল। স্বামী বাড়িতে না থাকায় ভুক্তভোগী ঘর থেকে বের হলে জোরপূর্বক তুলে বাড়ির পাশের বাঁশঝাড়ে যায়। সেখানে মশিউর ও জব্বারুলসহ অপর এক অপরিচিত ব্যক্তি ধর্ষণ করে।
ভুক্তভোগী নারী এবং তার স্বামী বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, যুবদলের নেতা হওয়ায় মশিউর রহমান ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে এবং মামলা না করার জন্য তাদের চাপ প্রয়োগ করে। এ কারণে ঘটনার ছয় দিন পর তারা থানায় গিয়ে মামলা করেন। তবে পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। বরং মশিউরসহ আসামিরা তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। এ কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা।
এদিকে, এ ঘটনার পর স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন।
অপরদিকে, যুবদল নেতার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের ঘটনায় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা যুবদলের এক নেতা বলেন, পদধারী কোনও নেতার ব্যক্তিগত অপকর্মের দায় দল নেবে না। মশিউরকে দল থেকে বহিষ্কারসহ সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম চলছে।

















