দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর পর প্রকাশ্যে রুকন সম্মেলন করল জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর হাতিরঝিল অঞ্চল। সম্মেলনে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। তিনি ছাত্র-জনতার যুগপৎ আন্দোলনের বিজয় টেকসই ও অর্থবহ করতে দলমতনির্বিশেষে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায় রুকনদের কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল সকালে রাজধানীর মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তনে এ রুকন সম্মেলন অনষ্ঠিত হয়।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য ও জোন পরিচালক হেমায়েত হোসাইনের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকারের পরিচালনায় সম্মেলনে দারসুল কোরআন পেশ করেন ড. মাওলানা হাবিবুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শেরেবাংলানগর দক্ষিণ থানা আমির আমিনুল ইসলাম, হাতিরঝিল পূর্ব থানা আমির অ্যাডভোকেট শেখ জিল্লুর রহমান আজমী, তেজগাঁও দক্ষিণ থানার আমির ইঞ্জিনিয়ার নোমান আহমেদী, হাতিরঝিল পশ্চিম আমির ইউসুফ আলী মোল্লা, তেজগাঁও উত্তর থানা আমির হাফেজ আহসান উল্লাহ, শিল্পাঞ্চল থানা আমির আলাউদ্দিন প্রমুখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, আওয়ামী-বাকশালিরা মানুষের মর্যাদা দেয়নি বরং আমাদের ক্ষেত্রে সব সময় শূন্য সহনশীলতা দেখানো হয়েছে। আমাদের ওপর অঘোষিতভাবে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ আগে থেকেই ছিল। এমন কোনো জুলুম-নির্যাতন নেই যা আমাদের ওপর চালানো হয়নি। কিন্তু তারা জামায়াতের অগ্রযাত্রা কোনোভাবেই রোধ করতে পারেনি বরং শত শাহাদাত ও জুলুম-নির্যাতনের পথ ধরেই জামায়াত কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে সফলভাবেই অগ্রসর হচ্ছে। আগামী দিনে মানবতার মুক্তির জন্য বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত ইনশাল্লাহ। তিনি দীন বিজয়ের লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে একটি মানবিক সমাজ কায়েম করতে চায়। আর এ কাজ গতিশীল ও অগ্রগামী করার জন্য আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে গণমানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে দাওয়াতি কার্যক্রম সম্প্রসারণের কোনো বিকল্প নেই। প্রতিটি ঘরে দাওয়াত পৌঁছাতে পারলেই দীন কায়েমের পথ প্রশস্ত হবে। নিজেদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি সৃষ্টির জন্য বেশি বেশি কোরআন, হাদিস ও ইসলামী বই অধ্যয়ন করতে হবে। সফলতার জন্য আল্লাহর সাহায্য চেয়ে তাহাজ্জুদ ও নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ধরনা দিতে হবে। তা হলেই আল্লাহ আমাদের বিজয়ী করবেন। মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন আরও বলেন, সাম্প্রতিক আন্দোলনে শহীদরা আমাদের জাতীয় সম্পদ ও গর্বিত সন্তান। তাই শহীদদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। শহীদ পরিবারের খোঁজখবর নিয়ে তাদের সমস্যা সমাধানে যথাযথ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। আহতদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সুচিকিৎসাসহ সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য অবদান রাখতে হবে। তাহলে দেশ ও জাতির যে কোনো দুর্ভোগকালে নতুন প্রজন্ম সর্বোচ্চ ত্যাগ ও কোরবানির জন্য উদ্বুদ্ধ হবে। তিনি শহীদদের স্বপ্ন ন্যায়বিচার ও সাম্যের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।