বাংলাদেশের ভয়াবহ বন্যা ও শেখ হাসিনা ইস্যু পর, এবার সীমান্ত ঘিরেও ভারতের সাথে বাংলাদেশের চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে, এমন খবর প্রকাশ করেছে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম।
তারা বলছে গত সপ্তাহের দুটি ঘটনার জন্য, এখন রীতিমতো মুখোমুখি অবস্থানে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও বিএসএফ।যা ভারত বাংলাদেশের মধ্যে চলমান রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক টানাপোড়েন কে আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
ভারতের গণমাধ্যমের দাবি, গেল বুধবার লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের হারিপাড়ার সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী কাঁটা তারের বেড়া নির্মাণের সময় তাতে বাধা দেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
ভারতের দাবি,তারা গবাদি পশু আটকানের জন্য বেড়া দিচ্ছিল।তবে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন অনুযায়ী শূন্য রেখা থেকে দেড়শ গজের মধ্যে কোন স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না কিন্তু বিএসএফের তত্ত্বাবধানে শূন্য রেখাতেই কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল ভারতের শ্রমিকরা।বিষয়টি নজরে এলে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি বাধা দেয় যার ফলে ভারতীয় বাহিনী বিএসএফ কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়।পরে ভারতীয় বাহিনীর সদস্যরা ভারী অস্ত্র নিয়ে সীমান্তে অবস্থান নেই, একই সাথে সীমান্তে বিপুল পরিমাণে কাঁটাতারের বেড়া ও নির্মাণসামগ্রী এনে রাখে। এর জেরে সেখানে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়ন করে সতর্ক নজরদারি বাড়িয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এর আগে ৫ ভারতীয় অপারেটর বাংলাদেশের জলসীমানায় ঢুকে গেলে তাদের আটক করে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীরা বিজিবি।
তবে যথারীতি ভারতের দাবি গঙ্গা নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে নাকি ভারতের নৌকাগুলো অসাবধানতাবশত বাংলাদেশের সীমানায় ঢুকে পড়ে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রায় ৪,১৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ আন্তর্জাতিক স্থল সীমান্ত রয়েছে। যে সীমান্তে ভারতীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয়েছে অনেক বাংলাদেশীরযার কোন বিচার কখনো বাংলাদেশ পাইনি।
২০১১ সালে কুড়িগ্রাম সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে থাকা কিশোরী ফেলানীর লাশের ছবি আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল দেশ-বিদেশে।ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ গুলি করে ১৫ বছর বয়সী ফেলানীকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখেছিল কাঁটাতারের উপর। শুধু ফেলানী নয় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে ২০১৪ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত গত নয় বছরে সীমান্তে বিএসএফের হাতে ২৪৫ বাংলাদেশীর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও একটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি।
এসব ব্যাপারে বরাবরই নিশ্চুপ ছিল শেখ হাসিনা সরকার আর এই বিচারহীনতাই সীমান্ত হত্যাকে উঁচকে দিয়েছে বলে মনে করছেন সীমান্ত বিশ্লেষকরা। মূলত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণ আন্দোলনের মুখে দেশত্যাগ করে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেওয়ার কারণে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে।শেখ হাসিনার ভারত প্রীতি মনোভাবের কারণে বাংলাদেশের জনগণের মনে তীব্র ভারত-বিদ্বেষের জন্ম নিয়েছে এবং তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।