শরীয়তপুর করেসপনডেন্ট:
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস নামে একটি পরিবহন কোম্পানির একাধিক বাস ভাঙচুর ও শ্রমিকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। বাস মালিকদের অভিযোগ, কোম্পানিটির কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন যাত্রাবাড়ী থানা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মুশফিকুর রহমান ফাহিম। পাশাপাশি তিনি বেশ কয়েকটি বাসের রুট পারমিটও দাবি করেছেন।
এ ঘটনার পর থেকে যাত্রাবাড়ী-শরীয়তপুর রুটে পরিবহনটির যাত্রীসেবা বন্ধ রয়েছে। ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এই রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাবেক এই যুবদল নেতা।
জেলার বাস মালিক সমিতি সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে শরীয়তপুর থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী, চৌরাস্তা এলাকায় নিয়মিত যাত্রী পরিবহন করে আসছে শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস পরিবহনের দুই শতাধিক বাস। এই রুটে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করেন অন্তত ৩০ হাজার যাত্রী। সম্প্রতি পরিবহন মালিকদের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠে যাত্রাবাড়ী থানা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মুশফিকুর রহমান ফাহিমের বিরুদ্ধে। তাকে চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর ও বেশ কয়েকজন শ্রমিককে মারধরের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার পর থেকেই বাস শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস পরিবহনের চালক মাসুদ রানা জানান, যাত্রাবাড়ী এলাকায় গেলেই কিছু দুর্বৃত্ত তাদের বাস ভেঙে ফেলছিল। শ্রমিকদের মারধরও করে তারা। ভয়ে ৫ দিন ধরে বাস চালাতে পারছেন না তিনি। বিষয়টির তিনি সুষ্ঠু সমাধান দাবি করেন।
মারধরের শিকার হওয়া নয়ন বেপারী নামে এক শ্রমিক জানান, যাত্রাবাড়ী যাওয়ার পর হঠাৎ তাদের বাসে হামলা চালায় ফাহিমের লোকজন। কিছু বুঝে উঠার আগেই তারা বাসের গ্লাস ভেঙে ফেলে। এ সময় তাকেও জখম করা হয়।
শরীয়তপুর আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক আহম্মেদ চৌকিদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যাত্রাবাড়ী রুটে চাঁদাবাজি হয়ে আসছিল। তবে তা সহনশীল পর্যায়ে ছিল। সম্প্রতি সাবেক এক যুবদল নেতা মালিক সমিতির কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। সাথে তিনি বেশ কয়েকটি বাসের রুট পারমিট দাবি করেন। তাকে টাকা না দেয়ায় বাস ভাঙচুর ও শ্রমিকদের মারধর করা হয়।
বাস মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক তালুকদার বলেন, ‘ফাহিম চাঁদার জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রতি মাসে গাড়ি থেকে চাঁদা তো নিচ্ছেই, এখন আরও বেশি টাকার আবদার তার। আমরা তার দাবি না মেনে বিএনপির হাইকমান্ডকে জানিয়েছি। এরপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বাসগুলোতে ভাঙচুর চালিয়েছে।’
এদিকে, চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন মুশফিকুর রহমান ফাহিম। তিনি বলেন, আমাদের গাড়ির রুট পারমিট থাকার পরেও শরীয়তপুরের বাস মালিক সমিতি সেগুলোকে অন্য উপজেলায় যেতে দিচ্ছে না। এখন তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে। আমি কারও কাছে চাঁদা দাবি করিনি। আমি চাঁদাবাজি করে থাকলে আমরা বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হোক। অভিযোগ প্রমাণ হলে আমি আমার অপরাধ মাথা পেতে নেবো।
চাঁদা দাবির অভিযোগ লিখিতভাবে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকেও জানিয়েছেন পরিবহন নেতারা। জানতে চাইলে পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ সম্পর্কে তিনি জানতে পেরেছেন। ঘটনাটি ডিএমপির ক্রাইম বিভাগকেও জানানো হয়েছে। ডিএমপির সাথে জেলা পুলিশ যৌথভাবে কাজ করছে।
/এএস