অভিযুক্ত কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহার হোসেন। (ছবি: সংগৃহীত)
সাতক্ষীরা করেসপনডেন্ট:
সাতক্ষীরার যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেনের বিরুদ্ধে ৫ কোটি টাকার মানহানি মামলা দায়ের করেছেন অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি প্রিজন্স শেখ আব্দুল অমিক। মামলায় বিবাদীর প্রতি সমন জারি করেছেন আদালত।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরা জর্জ কোর্টের জিপি অসীম কুমার মণ্ডল।
মামলার বাদী শেখ আব্দুল অমিক সাতক্ষীরা শহরের বাঁকাল এলাকার শেখপাড়ার বাসিন্দা। বর্তমানে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় বসবাস করেন তিনি।
মামলার বিবরণে তিনি উল্লেখ করেন, দীর্ঘ ২৩ বছর দেশের বিভিন্ন কারাগারে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে ২০১১ সালের ২৯ এপ্রিল অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। অবসরের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কারা অধিদফতরের অনিয়ম নিয়ে মাঝে মাঝে মন্তব্য করলেও তিনি সর্বদা কারা অধিদফতরের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে সচেষ্ট ছিলেন।
বাদীর অভিযোগ, গত ২৯ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে কারা মহাপরিদর্শক সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন এক পত্রে তাকে দেশের সকল কারাগারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। এ সংক্রান্ত চিঠির কপি সকল কারাগারে পাঠানো হয়। এতে বাদী সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন এবং তার সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
মামলার বাদী শেখ আব্দুল অমিক আদালতে বলেন, অবসরপ্রাপ্ত একজন জ্যেষ্ঠ কারা কর্মকর্তা হিসেবে তাকে দেশের সব কারাগারে প্রবেশে নিষিদ্ধ করা অন্যায় ও বেআইনি। এ ঘটনায় বাদী গত ১৮ মে ২০২৫ তারিখে মহাপরিদর্শককে প্রতিবাদলিপি দেন এবং পরবর্তীতে আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। প্রতিবাদপত্র ও লিগ্যাল নোটিশ দেওয়ার পরও বিবাদীপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
এরপর, গত ১৭ আগষ্ট আদালতে মামলা দাখিল করেছি। মামলায় বিচারক গেল ১০ সেপ্টেম্বর তারিখে বিবাদীর প্রতি সমন জারি করেছেন। আদালতে ৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণের মামলা দায়ের করেছি। বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. জিএম আবুবকর সিদ্দিক আদালতে বলেন, আমার মক্কেল একজন সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তা ছিলেন। তাকে বেআইনিভাবে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে অপমানিত করা হয়েছে। এজন্য মানহানির ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে।
গত ২৯ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে জারি করা এক আদেশে তাকে দেশের সব কারাগারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। এর ফলে তিনি সম্মানহানি ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন। এজন্য তিনি ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চান। তিনি আরও বলেন, গত ১৭ আগস্ট আদালতে মামলা দায়ের করেন বাদী। আাদালত নিদিষ্ট পরিমান কোর্ট ফি দাখিলের জন্য আদেশ দেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর বাপী পক্ষ হতে নিদিষ্ট পরিমান কোর্ট ফি দাখিলের পর বিবাদী পক্ষকে সমন ইস্যু করার আদেশ দেন আদালত।
আদালত আগামী ৭ অক্টোবর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য্য করেছেন। সাতক্ষীরা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের জিপি (সরকারি কৌশলী) অসীম কুমার মন্ডল বলেন, মামলার আগামী ধার্ষ তারিখ ৭ অক্টোবর কারা মহাপরিদর্শকে আদালতে হাজির হয়ে অথবা আইনজীবীর মাধমে কেন এ ধরনের আদেশ দেওয়া হয়েছিল তার যৌক্তিকতা আদালতে উপস্থাপন করবেন।
উল্লেখ্য, মামলাটি বর্তমানে সাতক্ষীরার যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতে বিচারাধীন।
/এমএইচআর