
লালমনিরহাট করেসপনডেন্ট:
উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গত দু’দিনে তীব্র স্রোতের পর তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এতে স্বস্তি আসেনি লালমনিরহাট জেলার তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষদের জীবনে। জেলার পাঁচ উপজেলার অন্তত ১৫টি গ্রামের প্রায় সাত হাজার পরিবার এখনও পানিবন্দি।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল থেকে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে পানি আরও কমতে শুরু করে। বিকেল ৩টা ও ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
এর আগে, মঙ্গলবার রাতে অতিরিক্ত পানির তোড়ে হাতীবান্ধা উপজেলার ধুবনী এলাকায় একটি কাঁচা রাস্তা ভেঙে পড়ে এবং একটি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারীতে একটি বাঁধ হুমকির মুখে পরেছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। ধুবনী এলাকায় একটি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে আজ সকালে পানি কিছুটা কমেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পানি স্তর স্থিতিশীল থাকতে পারে। এরপর ধীরে ধীরে পানি কমবে।
বন্যাকবলিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, গড্ডিমারী; কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী; আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা এবং সদর উপজেলার রাজপুর, খুনিয়াগাছ ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের গ্রামগুলো।
ইতোমধ্যেই কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে। ডুবে গেছে ফসলি জমি, বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট ও মাছের ঘের। অনেক এলাকায় পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আরিফুল ইসলাম বলেন, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে পানি বাড়তে থাকে। আমার ইউনিয়নের দেড় হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সড়ক ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অনেক এলাকা।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার। তিনি বলেন, পানিবন্দি মানুষের জন্য চাল, শুকনো খাবারসহ পর্যাপ্ত ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে।
/এমএইচআর

















