ফাইল ছবি
সুকান্ত চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা করেসপনডেন্ট:
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় একাত্তরের ২৫ মার্চ বাংলাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর চালানো গণহত্যার প্রসঙ্গ টেনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও বিরোধী দলের প্রধান শুভেন্দু অধিকারী বাদানুবাদে জড়িয়েছেন। দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর তুলনা নিয়ে তাদের মধ্যে বাদানুবাদ হয়।
গতকাল সোমবারের অধিবেশনে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছিলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ বাংলাদেশের নিরীহ বাঙ্গালীদের ওপর পাকিস্তানী সেনারা যেভাবে নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, সেই কায়দায় বিজেপি সরকার সেনাবাহিনীর মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষী মানুষদের ওপর নির্বিচারে অত্যাচার করে চলেছে। এ সময় সেনাবাহিনীর পদক্ষেপের সমালোচনাও করেন তিনি।
ব্রাত্য বসু এই বক্তব্যকে ঘিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা। আজ মঙ্গলবার তার ওই বক্তব্যের পাল্টা জবাব দেন শুভেন্দু অধিকারী।
তিনি বলেন, ভারতীয় সেনাবাহিনীকে অপমান ও জব্দ করতে সংবিধান এবং দেশবিরোধী কাজ করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ভারতীয় সেনার সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর তুলনা করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। এর থেকে লজ্জাজনক ঘটনা আর কিছু হতে পারে না।
একপর্যায়ে বিধানসভা বয়কট করেন শুভেন্দু অধিকারী। পাশপাশি তাকে পুরো অধিবেশনের সাসপেন্ডও করা হয়।
এদিকে, বিজেপি সরকার বনাম পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার অধীনে থাকা দেশটির সেনাবাহিনী এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার অধীনে থাকা পুলিশের সংঘাত চরমে পৌঁছেছে। এতে দেশ ও রাজ্যের মধ্যকার সৃষ্টি হওয়া সাংবিধানিক সংকট নিয়ে চিন্তায়।
প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার দুপুরে কলকাতায় সেনা হেডকোয়ার্টার ফোর্ট উইলিয়ামের কাছে বাংলা ভাষা নিয়ে আন্দোলনের জন্য তৈরি করা মঞ্চ অপসারণের অভিযোগ উঠে বাহিনীটির বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পৌঁছানোর পর সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যান।
সেনাবাহিনীর অভিযোগ, ক্যান্টনমেন্ট এরিয়ায় কোন অনুষ্ঠান কর্মসূচি করতে গেলে বাহিনীর অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস কোন অনুমতি পত্র দেখাতে পারেনি। এরপর বাহিনীর সদস্যরা অনুষ্ঠান মঞ্চের বাশ এবং ত্রিপল খুলতে থাকে।
তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, এই অনুষ্ঠানের পুলিশি অনুমতি ছিল। তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি বাঙালিদের ওপর পরিকল্পিতভাবে অত্যাচার চালাচ্ছে। বাংলা ভাষায় কথা বলাকে বন্ধ করতে চাইছে। তাই সেনাবাহিনী নামিয়ে বাংলা ভাষা আন্দোলনের মঞ্চ খুলে দিয়েছে।
এ ঘটনার পর বিকেলে কলকাতা পুলিশ ট্রাফিক আইন ভাঙ্গার অভিযোগে সেনাবাহিনীর একটি গাড়িকে আটক করে। তাছাড়া, কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে পরিকল্পনা মাফিক হত্যার অভিযোগে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এফআইআরও দায়ের করা হয়।
/আরএইচ