মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বানের পরও হামলা বন্ধ না হওয়ায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ফিলিস্তিনিদের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আশা। গাজার বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ মানুষের জীবন কাটছে চরম দুর্দশায়। বারবার থাকার জায়গা পরিবর্তন করে শরণার্থী জীবনযাপনে ক্লান্ত গাজাবাসী। সবকিছু হারিয়ে প্রতি মুহূর্তে কাটাতে হচ্ছে মৃত্যুভয় আর স্বজন হারানোর বেদনায়।
ফিলিস্তিনিরের এক নারীর গল্প অনেকটা এমন— এক সময় ছিলো সাজানো গোছানো সংসার। তবে আজকে খোলা আকাশের নিচে তাঁবুতে থাকতে হচ্ছে কোনোরকমে। যেখানে নেই কোনো সুযোগ-সুবিধা। ক্ষুধা আর মৃত্যুকে নিত্যসঙ্গী করেই জীবন কাটছে। এই গল্প গাজার নারী শেরিন খারুবের।
গত দুই বছর ধরে প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে গাজা সিটির একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছেন তিনি। সবশেষ পরিবারকে নিয়ে খান ইউনিসের একটি তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছেন ৫১ বছর বয়সী এই নারী।
শেরিন বলেন, দুই বছর আগে আমাদের একটা স্বাভাবিক জীবন ছিলো। আমরা সুখী ছিলাম। ঘুম থেকে উঠে কেউ স্কুলে যেত, কেউ কাজে যেত। কেউ ঘরের কাজ করত। আর এখন ঘুম থেকে উঠেই আমাদের খাবার আর পানি জোগারের চেষ্টা করতে হয়। কখন হামলা হবে এই ভয়েই দিন কাটে। কিছুক্ষন আগেই জানতে পারলাম, আমার ভাগ্নে মারা গেছে।
চিত্রটা এমন, না আছে মাথার ওপর ছাদ, না আছে পর্যাপ্ত খাবার। সর্বোক্ষণ হামলার আতঙ্ক আর স্বজন হারানোর বেদনায় দিন কাটে শেরিনের মতো আরও লাখো ফিলিস্তিনির। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় বোমা হামলা বন্ধে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানানোর পরও থামছে না তেলআবিব। এনিয়ে ক্ষুব্ধ-হতাশ ফিলিস্তিনিরা।
শেরিন আরও বলেন, আমি চাই এটা সত্যিই কার্যকর হোক, প্রতিবার আমরা যুদ্ধবিরতির কথা শুনি, কিন্তু যুদ্ধ থামে না। আমরা আর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি চাই না। আমারা সন্তান হারিয়েছি, ঘরবাড়ি হারিয়েছি, সব কিছু হারিয়েছি। আমরা আর সহ্য করতে পারছি না। আমরা বাস্তবে যুদ্ধবিরতি চাই।
উল্লেখ্য, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ৬৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। তবে যারা বেঁচে আছে তাদের টিকে থাকার সংগ্রাম মৃত্যুর চেয়ে আরও ভয়াবহ। জীবন ধারনের সকল সুযোগ থেকে বঞ্চিত গাজার মানুষের না আছে খাবার, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধ কিংবা পয়ঃনিষ্কাশনের সুবিধা।
/এমএইচআর