১৩ই জুলাই, ২০২৪। ঠিক এক বছর আগে এই দিনেই পেনসিলভানিয়া রাজ্যের নির্বাচনী সমাবেশে গুলিবদ্ধ হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রাণে বাঁচলেও কানে গুলি লাগে তার। সেই রক্তমাখা মুখ নিয়েই মুষ্টিবদ্ধ হাত উচুঁ করে সমর্থকদের প্রতি জানিয়েছিলেন সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রেসিডেন্টসহ রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের উপর হামলার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। আব্রাহাম লিংকন থেকে জন এফ কেনেডির সময়কালে মোট চারজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট খুন হয়েছেন আততায়ীর হামলায়। প্রাণঘাতী হামলা চালানো হয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী, মেয়র, গভর্নর, কংগ্রেস সদস্য এমনকি আইনজীবিদের উপরেও। গেলো মাসেই মিনেসোটায় নিজ বাড়িতে খুন হন রাজ্যটির আইনপ্রণেতা মেলিসা হর্টম্যান ও তার স্বামী।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক সহিংসতার ঝুঁকি বেড়েছে বলে সতর্ক করছেন সমাজকর্মীরা। বিশেষ করে ২০১৫ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে চলা সমাবেশের পর থেকেই সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের সিনিয়র ফেলো র্যাচেল ক্লেইনফেল্ড, ২০১৫ সালের নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকেই মুসলিম, ইহুদী আর তৃতীয় লিঙ্গদের প্রতি সহিংসতার ঘটনা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। মাঝে দু’বছর কিছুটা কমলেও আবারও বেড়েছে রাজনৈতিক সহিংসতা। শুধু তাই নয়, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, বিচারক থেকে শুরু করে শিশুদ;এর স্কুল বাসে অবধি হামলার ঘটনা দেখেছি আমরা।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে হোক কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সহিংসতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী রাজনীতিবিধরা। জ্বালাময়ী আর ঘৃণা ভরা ভাষণ দিয়ে তারা রাজনৈতিক সমাবেশগুলো উত্তপ্ত করে তোলে। বিপক্ষ দলের প্রতি চরম সহিংস এসব ভাষণ শুনে তাদের সমর্থকরাও সহিংসতা প্রবণ হয়ে উঠছে।
এসব সহিংসতার কারণ হিসাবে রাজনীতির মাঠে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়, পক্ষ-বিপক্ষের বিভাজন ও রাজনৈতিক মেরুকরণকেই দায়ি করছেন বিশ্লেষকরা। ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ ঘিরে মুসলিম ও ইহুদি বিরোধী ঘৃণা-প্রচারণাও সহিংসতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
গেল বছরেই কংগ্রেস সদস্যদের বিরুদ্ধে ৯ হাজার ৪০০টি হুমকির ঘটনা নথিভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল পুলিশ—যা এক দশকের আগের তুলনায় দ্বিগুণ।
/এমএইচআর