ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন যে তার দেশ রাশিয়ার সাথে শান্তি আলোচনার নতুন দফা শুরু করার প্রস্তাব দিয়েছে। গত মাসে আলোচনা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এটিকে পুনরায় চালু করার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সময় শনিবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যায় দেয়া এক ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা রুস্তেম উমেরভ আগামী সপ্তাহে রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন।
তিনি যোগ করেন, ‘যুদ্ধবিরতি অর্জনের জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের চেষ্টা করতে হবে।’
জেলেনস্কি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে সরাসরি বৈঠকেরও প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘শান্তি নিশ্চিত করতে নেতৃস্তরের বৈঠক প্রয়োজন।’
এই প্রস্তাব আসে রাশিয়ার ব্যাপক বিমান হামলার কয়েক ঘণ্টা পর, যাতে ইউক্রেনে তিনজন নিহত হয়েছে। জেলেনস্কি স্থানীয় শনিবার (১৯ জুলাই) সকালে জানান, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার পর্যন্ত ইউক্রেনের ১০টি অঞ্চল, যার মধ্যে বেশ কয়েকটি শহরও রয়েছে, রাশিয়ার হামলার শিকার হয়েছে।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানায়, রাশিয়া ৩৪০টিরও বেশি ড্রোন (কিছু ডামি সহ) এবং ৩৫টি ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক মিসাইল ব্যবহার করেছে। তবে অনেকগুলোই ধ্বংস করা হয়েছে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন যে ন্যাটো দেশগুলোর মাধ্যমে ইউক্রেনকে ‘সর্বাধুনিক অস্ত্র’ পাঠানো হবে। পাশাপাশি তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে ৫০ দিনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি না হলে রাশিয়ার ওপর কঠোর শুল্ক আরোপ করা হবে।
ট্রাম্প আরও সতর্ক করেন যে, তার দেয়া সময়সীমার মধ্যে যদি ইউক্রেনের সাথে শান্তি চুক্তি না হয়, তাহলে রাশিয়ার বাকি বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপর ১০০% শুল্ক বসানো হবে।
মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে ইস্তাম্বুলে দু’দফা আলোচনা হয়েছে, কিন্তু যুদ্ধবিরতির দিকে কোনো অগ্রগতি হয়নি। তবে বড় আকারের বন্দি বিনিময় ও নিহত সৈন্যদের মরদেহ ফেরত নেয়ার চুক্তি হয়েছে।
গত জুনের শুরুতে, শেষ হওয়া আলোচনায় ইউক্রেনের আলোচকরা বলেছিলেন যে রাশিয়া আবারও ‘নি:শর্ত যুদ্ধবিরতি’ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে—যা কিয়েভ ও তার পশ্চিমা মিত্রদের একটি প্রধান শর্ত।
রাশিয়াও নিজেদের কিছু শর্ত পেশ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনের কাছ থেকে আরও ভূমি ছেড়ে নেয়া এবং পশ্চিমা সামরিক সহায়তা পুরোপুরি বন্ধ করার দাবি।
ওই সময় জেলেনস্কি মস্কোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন যে তারা ‘পরবর্তী বৈঠককে ব্যর্থ করতে সবকিছু করছে।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণাঙ্গ আক্রমণ শুরু করেন। বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় ২০% ভূমি নিয়ন্ত্রণ করছে, যার মধ্যে ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়াও রয়েছে।
সূত্র: বিবিসি নিউজ।
/এআই