সীমান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সামরিক বাহিনীর মধ্যে। দুই পক্ষের গোলাগুলির পর কম্বোডিয়ার সামরিক অবস্থানে এফ-সিক্সটিন যুদ্ধবিমান নিয়ে হামলা চালায় থাই বিমান বাহিনী। সীমান্তে মোতায়েন করা হয়েছে মাল্টিপল রকেট লঞ্চার এবং স্বল্প পাল্লার মিসাইল সিস্টেম। সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৪ জন। সংঘাতের কারণে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার হুমকিও দিয়েছে দুই দেশ।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকালে অদ্দার মিনচেই প্রদেশের বিরোধপূর্ণ তা মোয়ান থম টেম্পলের কাছে হামলা চালায় কম্বোডিয়ান সেনারা। এরপর থেকেই দুই পক্ষে চলছে তুমুল লড়াই।
একদিকে কামান এবং বিএম টুয়েন্টি ওয়ান রকেট লঞ্চার দিয়ে হামলা চালায় কম্বোডিয়ান আর্মি। অন্যদিকে এফ-সিক্সটিন ফাইটার জেট থেকে হামলা করে থাই সামরিক বাহিনী।
বিবাদের শুরু গত ১৬ জুলাই। সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আহত হয় বেশ কয়েকজন থাই সেনা। ব্যাংককের দাবি, সীমান্ত এলাকায় মাইন পুতে রেখেছে কম্বোডিয়ান সেনারা।
থাই সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র সুরাসানাত কংসিরি বলেন, মাইন বিস্ফোরণে আমাদের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা হতাহত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, কম্বোডিয়ান বাহিনী আমাদের ওপর ড্রোন হামলাও করেছে। সীমান্তের ওপারে রকেট লঞ্চার, মেশিনগানের মতো ভারী অস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছে।
দেশটির অন্তর্বতী প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই বলেন, সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলির বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন যেন না হয় সে বিষয়টিতে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।
তবে কম্বোডিয়ার দাবি, তাদের সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে আগে হামলা চালায় থাই সামরিক বাহিনী। স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় যেকোন পদক্ষেপ নেবে নমপেন, এমন হুঁশিয়ার দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হান ম্যানেত বলেছেন, সকালে আমাদের সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা করে থাই বাহিনী। আমাদের দুটি প্যাগোডা লক্ষ্য করে চালানো হয় হামলা। তবে আমরা পিছু হঠবো না। যেকোনো মুল্য আগ্রাসন প্রতিহত করবো।
এদিকে ভয়ে আতঙ্কে এলাকা ছাড়ছেন দুই দেশের সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা। এখন পর্যন্ত ৪০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে দুই দেশ।
উল্লেখ্য, থাইল্যান্ডের সাথে কম্বোডিয়ার সীমান্ত বিরোধী শত বছরের পুরনো। দুই দেশের মধ্যে ৮শ’কিলোমিটারের বেশি সীমান্ত রয়েছে যারমধ্যে বেশ কিছু অংশ রয়েছে অমিমাংসিত। এরআগেও সীমান্ত ইস্যুতে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। ২০১১ সালেও সপ্তাহব্যাপী সংঘর্ষ হয় থাই-কম্বোডিয়ার মধ্যে।
/এমএইচআর