ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানার নির্মাণাধীন ৬ লেন রাস্তার দুই পাশের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ক্ষতিপূরণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বেলা ১১টায় শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ডের কালীগঞ্জ উপজেলা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির ভবনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ব্যবসায়ী শামসুল আলম জুয়েল বলেন, ‘আমরা ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ থানার ব্যবসায়ীবৃন্দ। মোংলা বন্দরের সঙ্গে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ সারা দেশের যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে যশোর-ঝিনাইদহ সড়কটি ৬ লেনে উন্নীতকরণের প্রকল্পের কাজ চলমান। আমরা ওই মহাসড়কের দুই পাশ দিয়ে বছরের পর বছর ভাড়া দোকানঘর নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করে কোনোভাবে দিনযাপন করে আসছি। সম্প্রতি রাস্তার দুই পাশের জায়গা-জমিসহ অবকাঠামো অধিগ্রহণে মালিকপক্ষকে ৮ ধারায় নোটিশ দিয়ে ক্ষতিপূরণের টাকা প্রাপ্তির বিষয়ে জানানো হয়েছে কিন্তু ভাড়া দোকানঘর নিয়ে ব্যবসায়ী ও তাদের শ্রমিকদের বিষয়ে কোনও নোটিশ দেওয়া হয়নি। আমাদের মধ্যে বেশির ভাগ ব্যবসায়ী ক্ষুদ্রঋণ ও ব্যাংকঋণে ক্ষতিগ্রস্ত। তারপরও আমরা আমাদের ব্যবসাকে অবলম্বন করে কোনোরকমে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। এখন আমরা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছি। বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন ব্যবসা হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে পথে বসতে চলেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যে দোকানঘর ভাড়া নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি তার সৌন্দর্যবর্ধনে প্রতিটি ঘরেরই শ্রেণি ও ধরন অনুযায়ী ইটের গাঁথুনি, টাইলস, রঙ, পানির ফিটিংস ভাড়াটিয়াদের নিজ খরচে করে নিতে হয়েছে। যাতে লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। এখন যদি ঘর মালিকরা ক্ষতিপূরণ পায় তাহলে আমরাও ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির দাবি রাখি।’
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ৬ লেন প্রকল্প পাস হওয়ার পর ২০২২ সালে জমি, ভবন, ব্যবসায়ী ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের কর্মরত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার লক্ষ্যে উপজেলার সকল ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ, আয়-ব্যয়, কর্মচারীর সংখ্যা ও বেতনসহ সকল প্রকার তথ্য সংগ্রহ এবং ভিডিও ধারণ করে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তার কোনও বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ‘আমরা প্রশাসন ও প্রকল্প পরিচালকদের কাছে আমাদের ব্যবসা স্থানান্তরের ক্ষতি, দোকানঘরের সৌন্দর্যবর্ধনের বিনিয়োগ ও শ্রমিক-কর্মচারীদের ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছি। আমাদের ন্যায্য দাবি ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া না হলে অচিরেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক নবচিত্র পত্রিকার সম্পাদক ও ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রসুল, সাবেক কাউন্সিলর ও ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন, হোটেল ব্যবসায়ী কাজী আমিন উদ্দীন, রাম ঘোষ, ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান, মো. ইউছুফ হোসেন, শহিদুল ইসলাম ও বায়োজিদ হোসাইন প্রমুখ।