মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদের মোহনা থেকে আবারও দুটি মাছ ধরার ট্রলারসহ বাংলাদেশি ১৩ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে।
তবে জেলেদের মাঝির আব্দুল হাফেজ ও আমিনের নাম জানা গেলেও বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি। সাগর থেকে মাছ শিকার শেষে টেকনাফ ফেরার পথে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে শাহপরীর দ্বীপের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে তাদের ধরে নিয়ে যায়।
এ তথ্যটি নিশ্চিত করে টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ঘাট ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, ‘আজকেও দুটি ট্রলার ও ১৩ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। এ ছাড়া আমাদের ঘাটে মাছ ধরতে আরও কয়েকটি ট্রলারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। মূলত ভাটার কারণে জেলার মিয়ানমার সীমানা দিয়ে ফেরার পথে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। এ পাশে চরের কারণে ট্রলার চলাচল করতে পারছে না।’
ওই ট্রলারের মাঝি আব্দুল হাফেজের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে বলে জানান আবুল কালাম। তিনি বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকার শেষে টেকনাফে ফেরার পথে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব-দক্ষিণে নাফ নদে ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা সংলগ্ন নাইক্ষ্যংদিয়া নামক এলাকায় পৌঁছালে আগে থেকেই ওতপেতে থাকা আরাকান আর্মির সদস্যরা স্পিডবোটে জেলেদের ধাওয়া করে আটক করেন। পরে তাদেরকে আটক করে মিয়ানমারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে আবুল কালামকে জানিয়েছেন ট্রলারের মাঝি আব্দুল হাফেজ। এরপর থেকে ট্রলারের মাঝিমাল্লাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু প্রতিদিন আরাকান আর্মির সদস্যরা বঙ্গোপসাগর থেকে ফেরারপথে বাংলাদেশি ট্রলারসহ জেলেদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। গত চার দিনে পাঁচটি ট্রলারসহ ৪৬ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে বলে ট্রলার মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে।’
ট্রলার মালিক ও বিজিবি জানায়, গত আট মাসে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নাফ নদসহ সংলগ্ন এলাকা থেকে কমপক্ষে ৩০০ জেলেকে অপহরণ করে আরাকান আর্মি। এর মধ্যে চলতি বছরের মার্চ থেকে ২৩ আগস্ট মাস পর্যন্ত অপহৃত হন ২২০ জন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সহায়তায় এদের মধ্যে প্রায় ২০০ জনকে কয়েক দফায় ফেরত আনা হয়। বাকি ১০০ জেলের মধ্যে গত এক সপ্তাহে ৫১ জনকে ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি।

















