বগুড়া শহরের শতাব্দী ফিলিং স্টেশনের অফিস কক্ষে ক্যাশিয়ার ইকবাল হাসানের (২৮) মাথায় ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতের কোনও একসময় এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর থেকে ফিলিং স্টেশনের সেলসম্যান রতন হোসেন (২৩) পলাতক রয়েছেন। পুলিশের ধারণা, এ হত্যাকাণ্ডে রতন জড়িত। নিহত ইকবাল সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার পিপুল বাড়িয়া বাজার এলকার আব্দুল করিমের ছেলে। তিনি শহরের দত্তবাড়ি এলাকায় মৃত আবদুল মোমিন দুলালের মালিকানাধীন শতাব্দী ফিলিং স্টেশনে ক্যাশিয়ার পদে চাকরি করতেন। শহরের কাটনারপাড়া এলাকায় থাকতেন। তার স্ত্রী নূপুর খাতুন পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। রবিবার বিকাল পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত তিন বছর ধরে ইকবাল ওই ফিলিং স্টেশনে চাকরি করেন। পলাতক রতন এক বছর ধরে সেখানে সেলসম্যান হিসেবে কাজ করেন। রতন বগুড়ার নিশ্চিতপুর এলাকার চান মিয়ার ছেলে। শনিবার রাত ১১টা থেকে স্টেশনে দায়িত্বে ছিলেন ইকবাল ও রতন। রবিবার সকাল ৮টার দিকে দিনের শিফটের কর্মচারীরা গিয়ে দেখেন, অফিসের দরজা খোলা। ক্যাশ কাউন্টারের টেবিলে ইকবালের রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। পাশাপাশি থানা পুলিশ ছাড়াও সিআইডি ও পিবিআইয়ের প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
পুলিশ জানায়, তার মাথা ও চোখে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পাশে একটি চুরি পড়ে ছিল। সেলসম্যান রতনের সন্ধান পাওয়া যায়নি। অফিস কক্ষে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙা অবস্থায় ছিল। পুরো ঘটনা তদন্ত করলে জানা যাবে, কেন হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
নিহত ইকবালের বোন সাদিয়া খাতুন বলেন, ‘তিন বছর ধরে ক্যাশিয়ার পদে চাকরি করছে ইকবাল। তার সঙ্গে কারও শত্রুতা ছিল না। দুদিন আগে ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম। ভাবি নূপুর পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আমার ভাইকে যারা হত্যা করেছে, তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান বাসির বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। সেলসম্যান রতনকে আটকের চেষ্টা চলছে। তাকে আটক করা গেলে ঘটনার রহস্য বের হবে।’
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু রায়হান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শনিবার রাতের কোনও একসময় চুরি দিয়ে স্টেশনের অফিস কক্ষে ইকবালকে হত্যা করা হয়েছে। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ থেকে সিআইডির ক্রাইম সিন টিম এসে আলামত উদ্ধার করেছে। ব্যক্তিগত শত্রুতা, আর্থিক লেনদেন ও পরকীয়া প্রেমের কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। তদন্তের পর এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’