রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার দরবারে হামলায় নিহত রাসেল মোল্লার বাবার করা মামলায় গোয়ালন্দ বাজার বড় মসজিদের ইমাম হাফেজ আবু সাইদকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার রাতে ফরিদপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আবু সাইদ গোয়ালন্দ উপজেলার অম্বলপুর গ্রামের আব্দুল জলিল শেখের ছেলে। এছাড়া একই মামলায় পুলিশ ঢাকার নাখালপাড়া এলাকা হতে বুধবার রাতে রাসেল শেখ (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করে। তিনি গোয়ালন্দ পৌরসভার দেওয়ান পাড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস শেখের ছেলে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গ্রেফতারকৃত দুই আসামিকে রাজবাড়ীর আদালতে তোলা হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। রাজবাড়ীর সহকারী পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘গ্রেফতারকৃত দুই আসামিকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘এ নিয়ে হত্যা মামলায় ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’
এর আগে মঙ্গলবার নুরাল পাগলার মরদেহ কবর থেকে তোলার ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে মরদেহ কবর থেকে তোলার ‘নির্দেশদাতা’ বলছে পুলিশ। গ্রেফতার ব্যক্তির নাম আব্দুল লতিফ (৩৫)। তিনি গোয়ালন্দ পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড জুড়ান মোল্লারপাড়ার বায়তুল মুকাদ্দাস জামে মসজিদের ইমাম এবং মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বড় ঠাকুরকান্দির মাওলানা বাহাউদ্দিনের ছেলে।
হামলার পর পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় পরদিন গোয়ালন্দ ঘাট থানার উপপরিদর্শক সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজারজনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া হামলায় নিহত দরবারের ভক্ত রাসেল মোল্লার বাবা সাবেক ইউপি সদস্য আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে ৮ আগস্ট সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজারজনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় এখন পর্যন্ত ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
৫ সেপ্টেম্বর জুমার নামাজের পর বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দফায় দফায় নুরাল পাগলার দরবার শরিফে হামলা চালানো হয়। একদল লোক নুরাল পাগলার লাশ কবর থেকে তুলে নিয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দের পদ্মার মোড় এলাকায় পুড়িয়ে দেন। এর আগে উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটির পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে বেশ কয়েকজন পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করেন। এতে ১০-১২ জন পুলিশ সদস্যসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে রাসেল মোল্লা (২৭) নামের এক ভক্ত নিহত হন।