‘মিয়ানমারের রাখাইনে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত। যার কারণে সম্প্রতি ইয়াবা ব্যবসা বেড়েছে। তদের (আরাকান আর্মির) সহায়তায় ইয়াবা-আইসের বড় বড় চালান বাংলাদেশে ঢুকছে। রোহিঙ্গা ও স্থানীয়রা ওপারে গিয়ে মাদকের চালান এপারে নিয়ে আসছে।’
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় কক্সবাজারের একটি হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় কক্সবাজারের রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন।
মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিষয় এমন না যে আরাকান আর্মি এসে এপারে ইয়াবা (মাদক) দিয়ে যাচ্ছে। যারা দেশের ভালো চায় না, তারা কিছু মাদক কারবারিরা সেখান থেকে মাদক নিয়ে আসছে। বিশেষ করে মিয়ানমার থেকে আসা মাদক-অস্ত্র রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঢুকছে। এটি আমাদের জন্য চিন্তার বিষয়। তাছাড়া সাগর পথে বেড়েছে মাদকের বড় বড় চালান। তাই মাদক বন্ধে আমাদের সবাইকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আরাকান আর্মির এমন কোনও শক্তি নেই আমাদের অভ্যন্তরে ঢুকে কাউকে ধরে নিয়ে যাওয়ার। মূলত নাফ নদ ও সাগরে মাছ শিকারের একপর্যায়ে জেলেরা মিয়ানমারের জলসীমায় ঢুকে পড়ে। এতে সেখানে যারা আছে, তারা ধরে নিয়ে যায়। আরাকান আর্মির সঙ্গে আমাদের অফিশিয়াল যোগাযোগ নেই, তবে আনঅফিশিয়াল যোগাযোগ চলছে। আমরা তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করছি, যেন আর কোনও জেলেকে ধরে নিয়ে না যায়। তাদের হেফাজতে ১০৪ জন জেলে রয়েছে। তাদের ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।’
রাখাইন থেকে প্রতিদিন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে কর্নেল মহিউদ্দিন বলেন, ‘রাখাইনে আবার পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। যার কারণে সীমান্তে অনুপ্রবেশ বাড়ছে। তবে আমরা কাউকে ঢুকতে দিচ্ছি না। প্রতিনিয়ত অনুপ্রবেশকারীদের প্রতিহত করা হচ্ছে।’
বিজিবি কমান্ডার বলেন, ‘সাগর পথে মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির সক্ষমতা না থাকলেও আমরা প্রতিনিয়ত আমরা তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহায়তা করছি। ইতিমধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নাফ নদ সীমান্তের বিভিন্ন জায়গায় ৬০ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া ৪.১১৬ কেজি ক্রিস্টাল মেথ উদ্ধার করা হয়। এসব ঘটনায় ১৮৮ চোরাকারবারিকে আটক করা হয়।
সভায় বিভিন্ন সময়ে মাদক আটকের পাশাপাশি কীভাবে জেলেরা জলসীমা অতিক্রমের কারণে ধরা পরছে সেটির বিভিন্ন ছবি এবং ভিডিও চিত্র তুলে ধরেন।