জয়পুরহাটে দিন দিন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে জলাতঙ্ক ভ্যাকসিন নিতে আসা রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিন গড়ে তিন শতাধিক মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছেন জেলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যকই বিড়ালের কামড় বা আঁচড়ে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শুধু গ্রামে নয়, শহরাঞ্চলেও এ ঝুঁকি বাড়ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০ জন রোগী জলাতঙ্ক প্রতিরোধে ভ্যাকসিন নিচ্ছেন। তবে জনবল সংকটে বিপাকে পড়ছেন দায়িত্বরত নার্স ও চিকিৎসকরা।
জয়পুরহাট শহরের বিশ্বাসপাড়া মহল্লার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমি আক্তার জানায়, অসুস্থ একটি বিড়ালের চিকিৎসা করতে গিয়ে নিজেই বিড়াল পালন শুরু করে সে। পরে বিড়ালের কামড়ে তাকে জলাতঙ্ক ভ্যাকসিন নিতে হয়েছে।
একই এলাকার শাহাদুল ইসলাম বলেন, ‘শখের বসে বিড়াল পালন করতে গিয়ে আমার পরিবারের চার জনকে বিড়ালের আঁচড়ে জলাতঙ্কের টিকা নিতে হয়েছে। বর্তমানে নতুন করে আরও চারটি বিড়াল ছানা রয়েছে ঘরে।’ তিনি পোষা বিড়াল ও কুকুরকে প্রাণিসম্পদ বিভাগের মাধ্যমে টিকাদানের আওতায় আনার দাবি জানান।
হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স মাছুমা আক্তার বলেন, ‘২৫০ শয্যা হাসপাতালে জনবল সংকটে চিকিৎসাসেবা দিতে হয় প্রতিদিন গড়ে দেড় হাজার রোগীকে। এর মধ্যে জলাতঙ্ক ভ্যাকসিন দিতে আসা প্রতিদিন গড়ে তিন শতাধিক রোগীকে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দিন দিন জলাতঙ্ক ভ্যাকসিন নেওয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেশিরভাগ রোগী বিড়ালে আক্রান্ত।’
হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. শহীদ হোসেন বলেন, ‘ভ্যাকসিন পর্যাপ্ত থাকলেও প্রতিদিন এত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। জলাতঙ্ক প্রতিরোধে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি। কারণ শুধু কুকুর নয়, বিড়ালের আঁচড় বা কামড়ও সমানভাবে মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। সচেতনতা আর সময়মতো ভ্যাকসিন গ্রহণই জলাতঙ্ক থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়।’
প্রাণিসম্পদ বিভাগের ভেটেরিনারি অফিসার ডা. রুস্তম আলী জানান, শুধু কুকুর নয়, বিড়ালের কামড় বা আঁচড় থেকেও জলাতঙ্ক ছড়ায়। তাই পোষা প্রাণীদের নিয়মিত টিকা দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. আল মামুন বলেন, ‘সময়মতো টিকা না নিলে জলাতঙ্কে মৃত্যুঝুঁকি শতভাগ। আক্রান্ত হলে দ্রুত ক্ষতস্থানে সাবান ও পানি দিয়ে ধুতে হবে এবং অবশ্যই ভ্যাকসিন নিতে হবে।’