অবশেষে সিলেট নগরীতে বেপরোয়াভাবে চলাচলকারী অটোরিকশার লাগাম টেনে ধরার উদ্যোগ নিয়েছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি)। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে মহানগর এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাবিরোধী অভিযান শুরু হচ্ছে।
সকাল ৮টা থেকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি পয়েন্ট যথাক্রমে মেন্দিবাগ, নাইওরপুল, জিতু মিয়ার পয়েন্ট, রিকাবীবাজার, পাঠানটুলা পয়েন্টে একযোগে অভিযান পরিচালিত হবে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী সরেজমিনে ধারাবাহিকভাবে প্রতিটি পয়েন্টে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন এসএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ও মিডিয়া অফিসার সাইফুল ইসলাম। সকাল ৯টায় রিকাবিবাজার পয়েন্টে এসএমপি কমিশনার এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন বলেও জানান তিনি।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিলেট নগরীতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। মূল সড়কে অটোরিকশা চলাচলে নাগরিক বিড়ম্বনার পাশাপাশি বিপদে পড়ছে অন্য যানবাহনগুলো। সেই সঙ্গে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা।
সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি কর্তৃপক্ষের অনুমতিপত্র ব্যতীত গণপরিবহন চালাতে বা চালাবার অনুমতি দিতে পারবেন না। কিন্তু সিলেটে অটোরিকশা চলাচল কোনও নীতিমালার মধ্যে পড়ছে না।
নগরের বাসিন্দারা বলছেন, পঙ্খিরাজের মতো তাদের গতিবিধি দেখলে উল্টো মনে ভয় জাগে, আতঙ্কিত থাকতে হয় গন্তব্যে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত যাত্রীদের। স্থানীয় সড়কগুলোর পাশাপাশি মূল সড়কেও দাপট অটোরিকশা চালকদের। সড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে তারা কোনও নিয়ম মানে না। হুট করে উঠে আসছে মূল সড়কে। চলে উল্টোপথেও। অনেক চালক বেপরোয়া গতিতে চালান। ফলে প্রতিদিন নগরীর ভেতর ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এছাড়া, সংশ্লিষ্ট দফতরের কোনও প্রশিক্ষণ না থাকায় অটোরিকশা চালকদের আচরণও মারমুখী। অনেক ক্ষেত্রে তারা যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করছেন অতিরিক্ত ভাড়া।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এবার ঈদেই ৩২ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে ব্যাটারিচালিত রিকশায়। এমন পরিস্থিতিতে ২০১৪, ২০১৭ ও ২০২১ সালে ৩ দফা হাইকোর্ট ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ ও আমদানি নিষিদ্ধ করলেও এসবের সংখ্যা না কমে বরং বাড়তে থাকে। সবশেষ গত বছর নভেম্বরে হাইকোর্ট আবারও তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারি রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন। এ অবস্থায় সোমবার থেকে নগরীতে শুরু হচ্ছে অটোরিকশাবিরোধী অভিযান।