মানিকগঞ্জ শহরের পশ্চিম বান্দুটিয়া এলাকায় কবি মহিদুর রহমান সড়কের একটি বাসা থেকে এক প্রবাসীর স্ত্রী ও তার দুই শিশু সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের পাশে বিষের ট্যাবলেট (অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইট) পাওয়া গেছে।
খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার ইয়াসমিন খাতুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, ‘দাম্পত্য কলহের জের ধরে দুই সন্তানকে হত্যার পর প্রবাসীর স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।’
মৃতরা হলেন- মালয়েশিয়া প্রবাসী শাহীন দেওয়ানের স্ত্রী শিখা আক্তার (২৭) এবং তার শিশু ছেলে আলভী (৭) ও দুই বছরের কন্যা সায়মা আক্তার।
প্রতিবেশী আলমগীর হোসেন জানান, সকালে বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার জন্য বাসার দরজার কড়া নাড়েন এক ব্যক্তি। কিন্তু কোনও সাড়া শব্দ না পেয়ে বাড়ির মালিককে খবর দেওয়া হয়। পরে ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেখে রুমের খাটের ওপর মা শিখা আক্তারের মরদেহ আর ফ্লোরে দুই শিশু সন্তানের মরদেহ দেখতে পায়।
প্রবাসী শাহীনের মামা আমান আনসারী জানান, শাহীন তার ফুফাতো বোনের ছেলে। শাহীন দেশে থাকতে হ্যালোবাইক চালাতেন। এক মাস আগে মালয়েশিয়ায় যান। শিখা আক্তার ছিলেন শাহীনের দ্বিতীয় স্ত্রী। দুই সন্তানের মধ্যে ছেলে আলভী আগের ঘরের সন্তান আর মেয়ে সায়মা শাহীনের নিজের সন্তান।
সদর থানার এসআই তরিকুল ইসলাম প্রবাসী শাহীনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে জানতে পেরেছেন- শাহীনের সঙ্গে স্ত্রীর দাম্পত্য কলহ চলছিল। মঙ্গলবার রাতে শাহীনের সঙ্গে তার স্ত্রী শিখার শেষ কথা হয়েছিল। এরপর স্ত্রীর ফোনে একাধিকবার কল করেও পাননি। সকালে প্রতিবেশী আলমগীর বিদুৎ বিল দেওয়ার জন্য দরজার কড়া নাড়লেও কোনও সাড়া শব্দ না পেয়ে ৯৯৯ ফোন দেন। পরে পুলিশ এসে লাশ তিনটি উদ্ধার করে।
বাড়ির মালিক রাহাত সালমানের ভাই জানান, গত আগস্ট মাসের ১৫ তারিখে বাসাটি ভাড়া নেন শাহীন। এরপর মালয়েশিয়ায় চলে যান। বাসা ভাড়া নেওয়ার পর শাহীনের স্ত্রী শিখা আক্তার তেমন থাকতেন না। দুদিন আগে শাহীনের স্ত্রী এই বাসায় উঠেন। ভাড়াটিয়া হিসেবে কারও সঙ্গে তেমন একটা সম্পর্ক ছিল না শিখার।
তিন জনের মরদেহ উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি একাধিক সংস্থা তদন্ত করছে।