ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আ. ব. ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী বলেছেন, ‘বিগত সরকারের আমলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক সাবজেক্টগুলো অবহেলিত ছিল। বিগত ১৬ বছর আমরা আমাদের রুহটাকে হাতে নিয়ে এখানে চাকরি করেছি। কখন রুহটা চলে যায়, এই শঙ্কায় ছিলাম। আমরা কথা বলতে পারতাম না। আমাদেরকে বলা হতো থিওলজির ডিপার্টমেন্টগুলোতে জঙ্গি সৃষ্টি হচ্ছে। বলা হতো, এখানে নাকি তাফহিমুল কোরআন পড়ানো যাবে না, এখানে সায়্যিদ কুতুবের তাফসির পড়ানো যাবে না। এই কনফারেন্স রুমে (উপাচার্যের কনফারেন্স রুম) আমাকে জবাবদিহি করতে হয়েছে আল-কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সেমিনার লাইব্রেরিতে তাফহিমুল কোরআন আছে কি না। তখন আমি বলেছিলাম, তাফহিমুল কুরআনের খারাপ দিক, ভালো দিক যদি আমরা না পড়াই, তাহলে শিক্ষার্থীরা তাফসির কীভাবে জানবে? সায়্যিদ কুতুবের তাফসির কীভাবে জানবে? তাফসির কুরতুবী আমরা না পড়ালে তাহলে তারা এটা কীভাবে জানবে?’
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স রুমে উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত সময়ে কেন্দ্রীয় মসজিদের সাউন্ড সিস্টেমের সমস্যা ছিল। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন কেন্দ্রীয় মসজিদের সাউন্ড সিস্টেমের উন্নতি করেছে। ফজরের সালাতে আসলে হৃদয়টা বিগলিত হয়ে যাবে। সিরাত মাহফিল এই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ভুলে গিয়েছিল। আমরা যখন ফার্স্ট ব্যাচের ছাত্র ছিলাম তখন সিরাত প্রতিযোগিতা হতো, কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতা হতো, কিন্তু এটা আগের সরকারের সময়ে ছিল না। বর্তমানে রচনা প্রতিযোগিতা, কেরাত প্রতিযোগিতা, হামদ প্রতিযোগিতা এবং সিরাতের ওপরে যে সেমিনার হয়েছে, এটা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে অনন্য।’
অধ্যাপক আশ্রাফী বলেন, ‘আগে আমরা স্বাধীনভাবে, আমাদের নিজস্ব সত্তা নিয়ে কাজ করতে পারিনি। যে সত্তার ওপরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত সেটা বাস্তবায়ন হয়নি, সেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত এক বছরে অনেক উন্নতি হয়েছে। বর্তমান প্রশাসন আমাদের থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের অধীনে ডিপার্টমেন্ট অব কম্পারেটিভ তাফসির এবং ডিপার্টমেন্ট অব আস-সিরাহ আন-নববীয়্যাহ নামে দুইটি বিভাগের অনুমোদন দিয়েছে এবং ‘ইসলামিক ও তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব’ নামে নতুন অনুষদের অনুমোদন দিয়েছে। অনতিবিলম্বে এটার কার্যক্রমও শুরু হবে। আমি আশা করি, এখন থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীনভাবে ধর্মচর্চা করতে পারবে।’
মতবিনিময় সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল ইসলাম, আইআইইআর পরিচালক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, আইকিউএসি পরিচালক অধ্যাপক ড. নাজিম উদ্দিন, আইএসি পরিচালক অধ্যাপক ড. নাসির উদ্দিন মিঝি, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।