বগুড়ার কাহালুতে বিরোধপূর্ণ পুকুরে মাছ ধরা নিয়ে যুবদল নেতা সোয়েব সরকার রাহুলকে (২৮) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জামিল হোসেন (৪৪) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।
বগুড়া জেলা ডিবি পুলিশের একটি দল মঙ্গলবার রাতে তাকে শেরপুর উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা থেকে গ্রেফতার করে। বুধবার (০১ অক্টোবর) দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক রাকিব হোসেন।
নিহত সোয়েব সরকার বগুড়া শহর যুবদলের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ও সুলতানগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও শাজাহানপুর উপজেলার কৈগাড়ি গ্রামের মৃত আবদুস সোবহান সরকারের ছেলে। গ্রেফতার জামিল হোসেন কাহালু সদরের পাল্লাপাড়া গ্রামের আবদুল মজিদ আকন্দের ছেলে ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাহালু উপজেলার মালঞ্চা ইউনিয়নের মাগুরা উত্তরপাড়া গ্রামে জোড়া ওয়াকফ এস্টেটের একটি পুকুর আছে। সেটি দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ নেতা জামিলের দখলে ছিল। তিনি ওই পুকুরে মাছ চাষ করতেন। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জামিল আত্মগোপনে চলে যান। এরপর গ্রামের কয়েকজনকে নিয়ে পুকুরটি দখলে নিয়ে মাছ চাষ করেন সোয়েব। মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে সোয়েব পুকুরে মাছ ধরছিলেন। এ সময় ৮-১০ জন সহযোগী নিয়ে তার ওপর হামলা চালান জামিল। আত্মরক্ষায় সোয়েব
পাশের একটি ফাঁকা বাড়িতে ঢুকে পড়েন। সেখানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। ওই দিন বিকালে নিহতের মা হাবিবা আকতার কাহালু থানায় হত্যা মামলা করেন।
ডিবি পুলিশের পরিদর্শক রাকিব হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত সোয়া ১২টার দিকে গোপনে খবর পেয়ে শেরপুরের কাশিয়াডাঙ্গা এলাকায় অভিযান চালিয়ে সোয়েব হত্যা মামলার প্রধান আসামি জামিলকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িত মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।’
কাহালু থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গ্রেফতার আসামি জামিল হোসেনের রাজনৈতিক পরিচয় তার জানা নেই।
নিহতের চাচা আবদুস সালাম সরকার বলেন, ‘মাগুরা উত্তরপাড়া গ্রামে আমাদের সম্পত্তি আছে। জোড়া ওয়াকফ এস্টেট নামে ওই সম্পত্তিতে পুকুর আছে। গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগ নেতা জামিল হোসেন ভোগ দখল করেছেন। পরে পালিয়ে যাওয়ার পর ভাতিজা সোয়েব ও কয়েকজন ওই পুকুরে মাছ চাষ করে। এ নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। বিষয়টি কাহালু থানা পুলিশকে একাধিকবার জানিয়েছি আমরা। পুকুর নিয়ে ওই বিরোধের জেরে জামিল ও তার লোকজন সোয়েবকে হত্যা করেছে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
















