চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে মোটরসাইকেল করে আসা অস্ত্রধারীদের ছোড়া গুলিতে মুহাম্মদ আবদুল হাকিম (৫২) নামের বিএনপির এক কর্মী নিহত হয়েছেন। এ সময় তার সঙ্গে গাড়িতে থাকা আরেকজন গুলিবিদ্ধ হন।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে উপজেলার দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়নের মদুনাঘাট বাজারের পানি শোধনাগার মূল ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় তিনি প্রাইভেটকারে চড়ে রাউজান থেকে চট্টগ্রামে ফিরছিলেন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চট্টগ্রাম নগরের বেসরকারি এভার কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আবদুল হাকিম রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের পাঁচখাইন গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রাউজানের বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী ছিলেন। তবে দলীয় কোনও পদে ছিলেন না। গরুর খামারের পাশাপাশি এক বছর ধরে কর্ণফুলী নদী থেকে বালু উত্তোলনের ব্যবসা করছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকাল ৫টার দিকে আবদুল হাকিম তার গ্রামের খামারবাড়ি থেকে অপর একজনসহ তার ব্যক্তিগত গাড়িতে করে কাপ্তাই সড়ক হয়ে চট্টগ্রাম নগরের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় চালকের পাশের আসনে বসা ছিলেন। মদুনাঘাট এলাকায় পৌঁছালে একদল মোটরসাইকেল আরোহী অস্ত্রধারী তার গাড়ির পিছু নেয়। পানি শোধনাগার এলাকায় পৌঁছালে তারা আবদুল হাকিমের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকেন। এতে দুজন গুলিবিদ্ধ হন। অপরজনের পরিচয় জানা যায়নি। স্থানীয়রা গুলিবিদ্ধ দুজনকে উদ্ধার করে নগরের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাকিমকে মৃত ঘোষণা করেন।
অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) তারেক আজিজ বলেন, ‘নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ আবদুল হাকিম মারা যান। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। একদল মোটরসাইকেল আরোহী আবদুল হাকিমের গাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি আমরা।’
উল্লেখ্য, রাউজানে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে সহিংসতায় মোট ১৩টি হত্যাকাণ্ড ঘটে। এর মধ্যে ১০টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয় অন্তত শতাধিকবার। ৩০০-এর বেশি মানুষ এসব ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন।