জামিন পেতে আদালতে অসুস্থ সেজেছেন রংপুরের পীরগাছায় অস্ত্র মামলার এজাহারনামীয় আসামি আনোয়ার হোসেন। পায়ে হেঁটে আদালতে এলেও এজলাসে ঢুকেছেন হুইল চেয়ারে বসে। তবে বিচারক বিষয়টি বুঝতে পেরে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির এ আদেশ দেন।
এদিকে আসামিকে অসুস্থ সাজিয়ে আদালতে মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় আইনজীবীকে ভর্ৎসনা করেছেন আদালত। ঘটনা জানাজানি হলে আদালতপাড়ায় তোলপাড় শুরু হয়।
রংপুর আদালতের কোর্ট পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম জানান, রংপুরের পীরগাছা থানার অস্ত্র মামলার এজাহারনামীয় আসামি আনোয়ার হোসেন নগরীর মুলাটোল এলাকার বাসিন্দা। আসামি এর আগে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করলে তাকে জামিন দিয়ে রংপুর আদালতে আত্মসমর্পণ করার আদেশ দেন। বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির হওয়ার শেষ দিন ছিল। আনোয়ার হোসেন আদালতে পায়ে হেঁটে আসেন। কিন্তু এজলাসে যাওয়ার সময় হুইল চেয়ারে বসে অসুস্থতার ভান ধরেন। পুরো বিষয়টি বিচারক সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করেন।
কোর্ট পরিদর্শক জানান, এরপর আসামি গুরুতর অসুস্থ উল্লেখ করে হুইল চেয়ারে আদালতে এসেছেন জানিয়ে তার আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। এ সময় বিচারক আদালতে বলেন, আসামি পুরোপুরি সুস্থ। হেঁটে আদালতে এসেছেন, আদালতে ঢোকার সময় অসুস্থতার ভান করে হুইল চেয়ারে আদালতে প্রবেশ করার দৃশ্য তিনি সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করেছেন। এ সময় বিচারক আসামিপক্ষের আইনজীবীকে ভর্ৎসনা করে বলেন, সুস্থ মানুষকে অসুস্থ বানানো চরম অন্যায়। এরপর বিচারক আসামির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে আসামিকে প্রিজন ভ্যানে করে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে আসামিকে আদালতের হাজতখানায় নেওয়ার সময় স্বাভাবিকভাবে পুলিশের সঙ্গে হেঁটে আসার সময় সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তিনি নাকি অসুস্থ। তাই হুইল চেয়ারে আদালতের ভেতরে ঢুকেছেন। এখন কেন স্বাভাবিকভাবে হেঁটে যাচ্ছেন- এমন প্রশ্নের কোনও উত্তর তিনি না দিয়ে মুখ লুকিয়ে আদালতের হাজতখানায় ঢুকে পড়েন।
এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবী নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, আসামি পায়ে হেঁটে স্বাভাবিকভাবে আদালত চত্বরে আসেন, এরপর জেলা জজের আদালতের সামনে আসেন। এরপর আদালতে প্রবেশ করার সময় হুইল চেয়ারে বসে অসুস্থতার ভান করেছেন- সেটা বিজ্ঞ বিচারক সিসি ক্যামেরায় দেখেছেন এসব কর্মকাণ্ডে বিচারক অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আদালত থেকে চলে যাওয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।