জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে এনসিপির কোনও সমস্যা নেই। তবে সরকারের ওপর গুরুত্বপূর্ণ যেসব দায়িত্ব রয়েছে যেগুলো বাস্তবায়ন না করলেই নয়, যেমন জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি দেওয়া, জুলাই সনদের বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দেওয়া, জুলাই আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের দৃশ্যমান বিচারিক প্রক্রিয়ার একটি বড় অংশ যেন আমরা কার্যকর দেখতে পারি। এ বিষয়গুলো দেখানো এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এই নির্বাচন কমিশন তাদের স্বাধীনতা, স্বকীয়তা বজায় রেখে নিরপেক্ষ থাকলে এবং তা প্রমাণ করতে পারলে নির্বাচনে এনসিপির সমস্যা নেই। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি শুধু নির্বাচনকেন্দ্রিক পরিকল্পনা করে, আমরা মনে করি বাংলাদেশের মানুষ তাদের ওপর আস্থা রাখবে না।’
কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এনসিপি জোট করবে কিনা এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি উল্লেখ করে সারজিস বলেন, ‘এনসিপি এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি, কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইলেক্ট্ররাল অ্যালায়েন্স (নির্বাচনি জোট) করবে কিনা। যদি করে অবশ্যই এই প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে করবে, তা হচ্ছে যারা আগামীর বাংলাদেশে জুলাই সনদের প্রতিটি সংস্কার বাস্তবায়নে কাজ করবে, যারা বিচার নিশ্চিত করতে কাজ করবে, যারা শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনের জন্য কাজ করবে, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের স্বার্থে আওয়ামী লীগবিরোধী অবস্থান ও ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী অবস্থান থাকলে এনসিপি তাদের সঙ্গে নির্বাচনি সমঝোতা করতে পারে।’
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জে এনসিপির সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা তিনি। জেলা শহরে সিটি ড্রিম কনভেনশন সেন্টারে এ সভার আয়োজন করে এনসিপির জেলা কমিটি।
জুলাই সনদে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে তা সংস্কার-সংশ্লিষ্ট বিষয় উল্লেখ করে সারজিস আলম বলেন, ‘এই সংস্কার-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। যে সংস্কারগুলো দীর্ঘমেয়াদি, তা আগামী সংসদ নির্বাচনে যারা নির্বাচিত হবেন এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে যারা স্বাক্ষর করেছে, তাদের প্রতিশ্রতি হবে ওই সনদে থাকা প্রতিটি দাবি ঐক্যবদ্ধভাবে আগামীর মেয়াদকালীন বাস্তবায়ন করবে তারা।’
এককভাবে জামায়াতে ইসলামী কিংবা বিএনপি ভারতীয় আধিপত্যবাদ এবং আওয়ামী লীগবিরোধী লড়াইকে শক্তিশালীভাবে চালিয়ে যেতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন সারজিস আলম। ভারতীয় আধিপত্যবাদ এবং আওয়ামী লীগবিরোধী লড়াইয়ে এনসিপি এবং তরুণ প্রজন্মের উপস্থিতি আবশ্যক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, দুর্নীতিবিরোধী আগামীর বাংলাদেশে জনআকাঙ্ক্ষার যে লড়াই, সেই লড়াইও সংসদে এই তরুণ প্রজন্ম ও এনসিপির প্রতিনিধি আবশ্যক। সেই লক্ষ্যে আমরা আমাদের সাংগঠনিক ভিত্তি শক্তিশালী করতে প্রতিটি জেলায় সাংগঠনিক সমন্বয় সভা করছি। আমরা মনে করি, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে এনসিপির আহ্বায়ক কমিটি থাকবে এবং শক্তিশালী ভিত্তি নিয়ে আগামী দিনে সংসদে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে।’
মানিকগঞ্জ এনসিপির জেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী জাহিদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সমন্বয়কারী এ এইচ এম মাহফুজের সঞ্চালনায় সমন্বয় সভায় বক্তব্য দেন এনসিপির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ হায়দার।

















