গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় বাবার বিরুদ্ধে নিজের কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি মেয়েটির ছোট বোন দেখে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এসে অভিযুক্ত বাবাকে আটক করে। পরে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী তাকে মারধর ও পিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে দেন তুলে দেন।
ঘটনাটি ঘটে বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকালে উপজেলার কিশোরগাড়ি ইউনিয়নে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগী শিশুটিকে উদ্ধার এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ ঘটনায় বুধবার রাতেই ভুক্তভোগী শিশুটির নানা বাদী হয়ে পলাশবাড়ী থানায় ধর্ষণের অভিযোগ এনে একটি মামলা করেছেন। অভিযুক্তের বয়স ৪২। পেশায় বাদাম বিক্রেতা ও গ্রাম ঘুরে হকারি করে।
পলাশবাড়ী থানার ওসি জুলফিকার আলী ভুট্টু বলেন, গত কয়েক মাস ধরে নিজের বড় মেয়েকে (১৪) বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণ করে আসছিল এ ব্যক্তি। বুধবার দুপুরে আবারও একই চেষ্টা চালায়। এ সময় ধস্তাধস্তি হলে ছোট মেয়ে ভয় পেয়ে চিৎকার শুরু করে। প্রতিবেশী ও আশপাশের লোকজন ছুটে এসে মেয়েকে উদ্ধার করেন এবং অভিযুক্তকে আটক করে গণপিটুনি দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
মেয়েটিকে পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ঘটনা স্বীকার করেছে। পেশায় বাদাম বিক্রি, হকারি করে। সে মাদকাসক্ত বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, ঘটনার পর শিশুটির নানা থানায় এসে একটি মামলা করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করা হবে। শিশুকেও আদালতে জবানবন্দির জন্য উপস্থাপন করা হবে। আদালত থেকে তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও শারীরিক পরীক্ষার জন্য সদর হাসপাতালে নেওয়া হবে।
পুলিশ ও মামলার বিবরণে জানা গেছে, চার মাস ধরে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে আসছিল। ভয়ে বিষয়টি কাউকে জানাতে পারেনি শিশুটি। স্থানীয়দের সন্দেহ থাকলেও প্রমাণের অভাবে ঘটনা আড়ালে ছিল। বুধবার বিকালে একই ঘটনা শিশুটির ছোট বোন দেখে ফেলে চিকিৎসার করে। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশে দেন।
ভুক্তভোগী শিশুটির নানা জানান, ১৪ ও ১২ বছরের দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে অভিযুক্ত ব্যক্তির। ৯ বছরের ছোট ছেলে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে। চার বছর আগে তাদের মা মারা যাওয়ার পর থেকেই তিন ভাই-বোন বাবার সঙ্গেই বাড়িতে বসবাস করছিল।
তার অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বড় মেয়ের ওপর নৃশংস যৌন নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। মেয়েটি অপমান-লজ্জার ভয়ে এত দিন মুখ খুলতে পারেনি। ছোট মেয়ে আচমকা সেই নির্মম দৃশ্য দেখে ফেললে ঘটনাটি প্রকাশ পায় ।

















