সাতক্ষীরা শহরের নিউমার্কেট মোড় এলাকায় পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত মাংস বিক্রির অভিযোগে এক মাংস ব্যবসায়ীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা এবং দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রবিবার (২ নভেম্বর) সকালে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা নিম্নমানের প্রায় ৩০ কেজি মাংসসহ ওই ব্যবসায়ীকে আটক করে সাতক্ষীরা পৌরসভা ও প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেন।
অভিযুক্ত ব্যক্তি দেবহাটা উপজেলার বহেরা এলাকার রুহুল কুদ্দুসের ছেলে ও ‘কবির মিট’-এর মালিক আব্দুল কাদের।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজুল ইসলাম জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তি কুলিয়া বাজার থেকে পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত মাংস এনে সাতক্ষীরা শহরের বিভিন্ন হোটেলে বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। খবর পেয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ভেটেনারি কর্মকর্তারা মাংস পরীক্ষা করে তা পচা ও খাওয়ার উপযোগী নয় বলে শনাক্ত করেন।
পরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী মামলা নং ৬৭০/২০২৫ ধারায় খাদ্য নিরাপত্তা আইনের ৪৫ ধারা মোতাবেক তাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা ও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। জব্দ মাংস পরে জনসমক্ষে কেরোসিন ঢেলে ধ্বংস করা হয়।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন– সাতক্ষীরা জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান, নিরাপদ খাদ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা দীপঙ্কর দত্ত, জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ভেটেরিনারি অফিসার ডা. বিপ্লব জিৎ মণ্ডল, মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল কাদের, সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমান, কাটিয়া ফাঁড়ির এসআই শেখ বোরহান, পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর রবিউল আলম লাল্টুসহ অনেকে।
এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তাজুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তি অবৈধভাবে পচা মাংস এনে শহরের বিভিন্ন হোটেলে সরবরাহ করছিলেন। প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরীক্ষায় মাংসটি পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত প্রমাণিত হয়েছে। ভোক্তা অধিকার আইনে তাকে দুই মাসের কারাদণ্ড এবং ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও ২০ দিনের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোন কোন হোটেলে এ মাংস সরবরাহ করা হতো তা জানার জন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ করছে এবং আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখছি।’
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ভেটেনারি কর্মকর্তা ডা. বিপ্লব জিৎ মণ্ডল বলেন, ‘ওই মাংসের প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, স্বাভাবিক রং নেই এবং তীব্র দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। এটি হয়তো অনেক আগে জবাই করা, অথবা মৃত প্রাণীর মাংস হতে পারে। এ মাংস খাওয়ার উপযুক্ত নয়। মানবস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ ও তাজা মাংস গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।’

















