তিন দশক পর ২টি ট্রেনের পুনরায় যাত্রা বিরতি দিয়েছে খুলনার ফুলতলা রেলওয়ে স্টেশনে। ট্রেন দুটি হলো বেনাপোলগামী বেতনা এক্সপ্রেস ও সৈয়দপুরগামী রকেট।
বেতনা এক্সপ্রেস আপে শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকাল ৬টা ৪১ মিনিট ও সৈয়দপুরগামী রকেট আপে সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে স্টেশনে পৌঁছে বলে স্টেশন মাস্টার ইনচার্জ জয়ব্রত সাহা জানান।
তিনি জানান, এটা শুরু হলো। এখন থেকে বেতনা এক্সপ্রেস আপে সকাল সাড়ে ৬টা ও ডাউনে সন্ধ্যা ৬টা ৪৯ মিনিটে এবং সৈয়দপুরগামী রকেট আপে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে এবং ডাউনে রাত আড়াইটায় স্টেশনে থামবে। স্টেশনে জনবল সংকট ও নিরাপত্তা সমস্যায় ভুগছি। ট্রেন দুটির যাত্রাবিরতির আমরা পেয়েছি। কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদাও দিয়েছি। এখন অপেক্ষায় আছি এটি পূরণের।
এদিকে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে দুটি ট্রেন স্টপেজ দেওয়ায় যাত্রাবিরতি কমিটির উদ্যোগে শুক্রবার সকালে বেতনা এক্সপ্রেস স্টেশনে পৌঁছালে যাত্রীসহ এলাকাবাসী প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে ট্রেনটিকে স্বাগত জানান। এ উপলক্ষে যাত্রাবিরতি কমিটির উদ্যোগে শুক্রবার সকালে এক বরণ অনুষ্ঠান অধ্যাপক অহিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি ছিলেন যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান। বক্তারা এ সময় ইন্টারসিটি ট্রেন বিশেষ করে ঢাকাগামী জাহানাবাদ ট্রেন যাত্রা বিরতির জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
নতুন করে ট্রেনের যাত্রা বিরতিতে স্বস্তি ফিরে এসেছে ফুলতলা উপজেলাসহ অভয়নগর ও ডুমুরিয়ার একটা বৃহৎ অংশের জনগণের মাঝে। ফুলতলা স্টেশনে ঢাকাগামী জাহানাবাদ এক্সপ্রেসের আপ এবং ডাউন যাত্রা বিরতিরও দাবি জানান এলাকাবাসী।
অধ্যাপক সুব্রত কুমার বিশ্বাস বলেন, ফুলতলা রেল স্টেশন একটা ঐতিহ্যবাহী স্টেশন। কিছু সমস্যার কারণে এখানে দীর্ঘদিন বেনাপোল ও উত্তরবঙ্গগামী কোন ট্রেন থামতো না। ফলে আমাদের নওয়াপাড়া বা দৌলতপুর যেতে হত। এখন থেকে আমরা এখান থেকে যেতে পারবো। ফলে সময় ও অর্থ দুটোই সেভ হবে আমাদের।
শ্রমিক নেতা আবদুল মজিদ মোল্লা বলেন, আমি জুট মিলে চাকরিকালে এখান থেকে বেনাপোল গিয়েছিলাম। কিন্তু পরে সরকার সেটা বন্ধ করে দেয়। স্টেশনে যাত্রা বিরতির দাবিতে গঠিত কমিটির একজন সদস্য হিসেবে আনন্দিত হয়েছি এই দুটি ট্রেন দেওয়ায়। তবে জাহানাবাদ এক্সপ্রেসের যাত্রাবিরতি এ অঞ্চলের গণমানুষের দাবি।
ফুলতলা স্টেশনে ট্রেন থামার দাবিতে গঠিত যাত্রা বিরতি কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক নাসির উদ্দিন বলেন, অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ও কিছু মানুষের বদান্যতায় আমরা এই মুহূর্তে এই দুটি ট্রেন পেয়েছি। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যে আরও কয়েকটি ট্রেনের যাত্রা বিরতি পাব।
যাত্রাবিরতি কমিটির আহ্বায়ক ইকতিয়ার শেখ বলেন, দীর্ঘদিনের দাবি ছিল প্রাচীন এ স্টেশনে তার ঐতিহ্য ফিরে আসুক। আমাদের দাবি কিছুটা হলেও পূরণ হলো।

















