বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘একটা দল বলছে গণভোট হতে হবে নির্বাচনের আগে। আমরা বলছি, গণভোট যদি হতেই হয় নির্বাচনের দিনে হতে পারে। গণভোট, সনদ এগুলো আমরা বুঝি না, জনগণ বোঝে না। কিছু উপর তলার লোক আমেরিকা ও অন্য জায়গা থেকে এসে এগুলো আমাদের ঘাড়ের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। তবে আমরা বিএনপি থেকে বলেছি, এগুলো আমরা মেনে নিয়েছি। পরিবর্তন আমরা চাই, তবে যে পরিবর্তনগুলোতে আমরা একমত নই সেগুলো নির্বাচিত সংসদে গিয়ে তর্ক-বিতর্কের মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’
রবিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নবাসীর সঙ্গে দৌলতপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আগামী নির্বাচন হবে ৫ আগস্ট গণহত্যাকারী ও ৭১ গণহত্যার দোসরদের পরাজিত করার নির্বাচন। এ দেশে দুটি উল্লেখযোগ্য গণহত্যা হয়েছে একটা ৭১ এ, আরেকটা ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে এ। দুটোই ভয়ংকর অপরাধ। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে যারা স্বৈরাচারের সঙ্গে গণহত্যায় জড়িত তাদের বিচার চলছে, আশা করি আমরা ন্যায্য বিচার পাবো। তেমনি ৭১ এর গণহত্যায় হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীকে যারা সহায়তা করেছিল আমরা তাদেরকেও বর্জন করবো আগামী নির্বাচনে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা গত ১৫ বছর ভোট দিতে পারিনি, তাই এবারের নির্বাচন আমাদের গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনের মাধ্যমেই আমরা দেশকে একটা স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে যেতে পারি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমানে দেশে আপনারা যে কৃষকরা আলু চাষ করেছিলেন, তারা ন্যায্যমূল্য পাননি। কোল্ডস্টোরে রাখা নিয়েও বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন। তেমনিভাবে ঠাকুরগাঁওয়ে উৎপাদিত করলা, বেগুনসহ সবজি চাষিরাও তাদের ফসলের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। বিএনপি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় গেলে কৃষকের সব ফসলের ন্যায্যমূল্য পাওয়াটা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
বিএনপি মহাসচিব সার সংকটের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচিত হয়ে আসেনি, তাই তারা কৃষকের এসব সমস্যা বুঝতে পারেন না। নির্বাচিত সংসদ থাকলে এসব সমস্যা হতো না। বিএনপি নির্বাচিত হলে কৃষকের সব সমস্যা সমাধানে অগ্রাধিকার দেবে। কৃষকরা কৃষি কার্ড পাবেন, যার মাধ্যমে তারা ন্যায্যমূল্যে কৃষি উপকরণ পাবেন, মা-বোনরা পাবেন ফ্যামিলি কার্ড, যার মাধ্যমে চাল-ডালসহ যাবতীয় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস তারা পাবেন ন্যায্যমূল্যে।’
তার জীবনের সম্ভাব্য শেষ নির্বাচন উল্লেখ করে তিনি জনসাধারণকে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
জগন্নাথপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, বিএনপি নেতা শরিফুল ইসলাম শরীফ, সদর উপজেলা সভাপতি আব্দুল হামিদ, ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান লিটনসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

















