Swadhin News Logo
শুক্রবার , ১৪ নভেম্বর ২০২৫ | ৮ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. best
  2. cassinoBR
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও প্রকৃতি
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. চাকরি
  8. জাতীয়
  9. জোকস
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. দেশজুড়ে
  12. ধর্ম
  13. নারী ও শিশু
  14. প্রবাস
  15. বই থেকে

ঢাকায় ডেকে ব্যবসায়ীর লাশ ১৫ টুকরা, কী ঘটেছিল?

প্রতিবেদক
Nirob
নভেম্বর ১৪, ২০২৫ ৯:৪৪ পূর্বাহ্ণ
ঢাকায় ডেকে ব্যবসায়ীর লাশ ১৫ টুকরা, কী ঘটেছিল?

ঢাকায় জাতীয় ঈদগাহের সামনে ড্রাম থেকে উদ্ধার খণ্ডিত লাশটি রংপুরের বদরগঞ্জের সবজি আশরাফুল ইসলামের। তাকে পরিকল্পিতভাবে পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে ঢাকায় ডেকে নিয়ে গিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে স্বজনরা অভিযোগ করেছেন। তাকে ঢাকায় ডেকে নিয়ে যাওয়া অভিযুক্ত জরেজ মিয়া ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন।

আশরাফুল ইসলামের বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের শ্যামপুর নয়া পাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের আব্দুর রশীদের ছেলে।

এদিকে নিহত সবজি আড়তদার আশরাফুল ইসলামকে বেশ কয়েকদিন ধরে মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন তার শ্যালক মজিদ আলী। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে তিনি বদরগঞ্জ থানায় বেশ কয়েকবার জিডি করেছিলেন বলেও জানিয়েছেন স্বজনরা। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। হত্যা করে লাশ টুকরা টুকরা করে দুটি ড্রামে ভরে ঢাকার জাতীয় ঈদগাহ মাঠের কাছে ফেলে রেখে যায় খুনিরা।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাত সোয়া ৭টার দিকে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে পরিচয় শনাক্ত করে। সিআইডির টিম লাশ ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে তার পরিচয় বের করে। তবে কারা কীভাবে তাকে হত্যা করে জাতীয় ঈদগাহের সামনের সড়কে রেখে গেছে তা এখনও বের করতে পারেনি পুলিশ।

এদিকে এ ব্যবসায়ীর টুকরো লাশ উদ্ধারের পর তার পরিচয় জানাজানি হলে স্বজনরা তার ছবি দেখে নিশ্চিত হন। মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়ার পর তার বাবা আব্দুর রশীদ, স্ত্রী লাকি বেগম, শ্যালক মজিদ আলীসহ স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।

আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী লাকী বেগম তার ছোট ছেলেকে নিয়ে বদরগঞ্জ থানায় ছুটে যান। পুলিশ নিহত ব্যক্তি তার স্বামী আশরাফুল ইসলাম নিশ্চিত করার পর দফায় দফায় থানার ভেতরেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তার বুকফাটা আর্তনাদে থানার বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। 

কী ঘটেছিল

বদরগঞ্জ থানা পুলিশ, নিহতের স্ত্রী লাকি বেগম ও শ্যালক মজিদ আলী জানান, গত মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) একই গ্রামের জরেজ মিয়া নামে এক ব্যক্তি আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে তাকে ওই রাতেই ঢাকায় নেওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি শুরু করেন। সন্ধ্যার দিকে আশরাফুল রংপুর নগরীর নিসবেতগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি প্রাইম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাবা আব্দুর রশীদকে দেখতে যান। সেখানেই তার ব্যাবসায়িক পার্টনার জরেজ তাকে জানান, ঢাকার আড়তদারদের কাছ থেকে পাওনা টাকা আনতে জরুরি ঢাকা যাওয়া প্রয়োজন। এসব কথা বলে আশরাফুলকে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার রাতেই ঢাকায় যান জরেজ।

বুধবার দুপুরের দিকে স্ত্রী লাকী বেগম আশরাফুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কল করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়ায় জরেজ আশরাফুলের মোবাইল ফোনটি ডাস্টবিনে পাইছে জানিয়ে বলেন, ‘তার সন্ধান করছি। সেই সঙ্গে থানায় জিডি করতে যাচ্ছি’। এরপর জরেজ বলেন, ‘খবর পেয়েছি আশরাফুলের লাশ কয়েক টুকরা করে ঢাকার জাতীয় ঈদগাহ মাঠের কাছে দুটি ড্রামে পাওয়া গেছে।’ এরপর থেকে জরেজের মোবাইল ফোন বন্ধ।

নিহতের শ্যালক মজিদ আলী জানান, তার দুলাভাই সবজির আড়তদারি ব্যবসা করতেন। এ ছাড়া আলু, ভুট্টাসহ বিভিন্ন মালামাল রংপুর থেকে ঢাকার বিভিন্ন আড়তে সরবরাহ করতেন। অনেক টাকাও তার বকেয়া ছিল। সেই টাকা আদায়ের চেষ্টা করছিলেন। পাওনাদারদের দেওয়া চেক নিয়ে ব্যাংকে গিয়েও টাকা পাননি। এতে ডিজওনারের মামলা করেছেন। সেই মামলার পর থেকে মোবাইল ফোনে অব্যাহতভাবে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এ জন্য নিজের নিরাপত্তার জন্য বদরগঞ্জ থানায় কয়েকটা জিডি করেছেন।

নিহত আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী লাকি জানান, জরেজ পাওনা টাকা আদায় করে দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে খুনিদের সঙ্গে যোগসাজশ করে তাকে হত্যা করে। এরপর লাশের পরিচয় যাতে না পাওয়া যায় সে জন্যই ১৫ টুকুরা করে কালো পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে দুটি ড্রামে টুকরো করা লাশগুলো ভরে একটি ভ্যানে জাতীয় ঈদগাহের সামনে ফেলে রেখে যায়।

তিনি বলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সবচেয়ে বড় কথা হত্যা করে একজন মানুষের লাশ ১৫/১৬ টুকরা টুকরা করে কেটে ড্রামে ভরে ফেলে চলে যাওয়া মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। তিনি সব খুনির গ্রেফতার ও বিচার দাবি করেন।

বদরগঞ্জ থানার ওসি এ কে এম আতিকুর রহমান রহমান বলেন, ঘটনাস্থল ঢাকায়। মামলা করতে হলে সেখানেই করতে হবে। তবে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করবো। সেইসঙ্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে দ্রুত সময়ে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করার চেষ্টা করছি। ঢাকাতেও আমরা যোগাযোগ করেছি, আইনি পদক্ষেপ পুলিশ নিচ্ছে।

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক