৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার সময় পেছানোর দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী রেলপথ অবরোধ করেছেন প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। শনিবার (২২ নভেম্বর) বিকাল পৌনে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন স্টেশন বাজার রেললাইন অবরোধ করেন তারা। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কর্মসূচি চলমান রয়েছে।
এ সময় তারা ‘২৪ এর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’, ‘বৈষম্যবিরোধী বাংলায়, স্বৈরাচারের ঠাই নাই’, ‘৪৭ মারা রোডম্যাপ, বাতিল চাই করতে হবে’, ‘সবাই পায় ছয় মাস, আমরা কেন দুই মাস’, ‘সময় চাই সময় চাই, যৌক্তিক সময় চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
অবরোধে অংশ নিয়ে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের রাবি শাখার সভাপতি মাহবুব আলম বলেন, ‘৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার জন্য দুই মাস সময় দিয়েছে। যা এগারো শ মার্কের লিখিত পরীক্ষার জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
‘আমরা দীর্ঘ একমাস ধরে দাবি জানিয়ে আসলেও পিএসসি তাদের একরোখা মনোভাবই পোষণ করে রেখেছে। লিখিত পরীক্ষার দুই মাস আগে রুটিন প্রকাশ করার কথা থাকলেও আমাদের সময় এক মাস আগেই সেটা করা হয়েছে। যার মানে পিএসসি নিজেই নিজের রোডম্যাপ লঙ্ঘন করেছে। তারা ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের সময় দেওয়ার জন্য আমাদের প্রিলিমিনারি পরপর তিনবার পিছিয়েছে।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রোনোমি অ্যান্ড এগ্রিকালচার এক্সটেনশন বিভাগের শিক্ষার্থী আনিকা তাবাসসুম বলেন, ‘আমাদের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়েছিল ১৯ সেপ্টেম্বর, কিন্তু লিখিত পরীক্ষার জন্য মাত্র দু মাস সময় দেওয়া হয়েছে, যা একদম অযৌক্তিক। ছাত্রশিবির, এনসিপি, ছাত্রদলসহ অন্য ছাত্রসংগঠনগুলো আমাদের যৌক্তিক দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে, যৌক্তিক সময় দেওয়ার জন্য৷ তাহলে কেন আমাদের যৌক্তিক সময় দেওয়া হচ্ছে না?’
আন্দোলনকারী আরেক শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান বলেন, ‘আমরা কোনও অযৌক্তিক আন্দোলন করছি না৷ যতগুলো ছাত্রসংগঠন আছে সবাই আমাদের দাবিকে সমর্থন দিয়েছে, অথচ পিএসসির টনক নড়েনি। বিসিএসের মতো লিখিত পরীক্ষার যে সিলেবাস সেটা দেড় মাসে দিনরাত পড়লেও সম্ভব না। আমাদের এই যৌক্তিক আন্দোলনে দেশের সব মানুষ, এমনকি যারা ক্যাডার পর্যন্ত হয়ে গেছে তারাও সাপোর্ট দিয়েছেন– কিন্তু পিএসসির কেন টনক নড়ছে না, এটাই আমাদের প্রশ্ন।’
এদিকে, অবরোধে রাজশাহীর সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অবরোধ চলছিল। বিকাল থেকে তারা রেললাইনে বসে থাকলেও সন্ধ্যায় আগুনও জ্বালানো হয়েছে। তাই কয়েকটি ট্রেন আটকে আছে স্টেশনে। রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ায় রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে অপেক্ষমান যাত্রীদেরও দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার আবদুল মালেক জানান, বিকাল ৪টায় রাজশাহী থেকে ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনের। সেটি স্টেশনে আটকে আছে। ঢালারচরমুখী ঢালারচর এক্সপ্রেস আটকে আছে বিকাল ৫টা ২০ মিনিট থেকে। ঈশ্বরদীর উদ্দেশ্যে সন্ধ্যা ৭টায় একটি কমিউটার ট্রেন যাওয়ার কথা থাকলেও সেটিও আটকে আছে।
তিনি আরও জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেন হরিয়ান স্টেশনে আটকে আছে। অবরোধের কারণে ট্রেনটি রাজশাহী ঢুকতে পারছে না। রাত ১১টা ২০ মিনিটে ধূমকেতু এক্সপ্রেস রাজশাহী থেকে ঢাকা যাওয়ার কথা আছে। সেটিরও বিলম্ব হতে পারে।













