প্রশাসনের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ ঘণ্টা পর দিনাজপুরের পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয় ত্যাগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ট্রাফিক মোশফেকুর রহমানের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে– বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে এমন আশ্বাসের পর তারা পুলিশ সুপার কার্যালয় ত্যাগ করেন। এর আগে শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটক খুলে দেন।
এর আগে বুধবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ট্রাফিক মোশফেকুর রহমানকে গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। পরে তাকে প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু শুধু প্রত্যাহার নয়, তাকে গ্রেফতারের দাবিতে কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনেই অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা। রাতেও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী সেখানেই ছিলেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার পর শিক্ষার্থীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের প্রধান ফটক আটকে দিয়ে সবার আসা-যাওয়া বন্ধ করে দেয়। এতে সেবা নিতে আসা মানুষজনও ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি।
শিক্ষার্থীরা জানান, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ট্রাফিক মোশফেকুর রহমানের ফেসবুক আইডি থেকে গোপালগঞ্জে এনসিপির জনসভায় হামলার ঘটনায় ট্রল করে একটি পোস্ট দেন। ওই ফেসবুক পোস্ট দেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। তাকে দিনাজপুর থেকে প্রত্যাহার ও গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রবেশ করে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ সুপার মারুফাত হোসেন আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করেন যে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোশফেকুর রহমানকে দিনাজপুর থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে তাকে আটক না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা কমিটির আহ্বায়ক একরামুল হক আবির বলেন, ‘অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোশফেকুর রহমান যে পোস্ট দিয়েছেন তা বিপ্লবীদের অসম্মান করার মতো। এর আগেও গত ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে তার নির্দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করা হয়। এই ঘটনার পর থেকেই তিনি দিনাজপুরে কর্মরত রয়েছেন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। তাকে যদিও প্রত্যাহার করা হয়েছে, কিন্তু আমাদের দাবি তাকে গ্রেফতার করতে হবে।
‘পুলিশ সুপার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এরপরও আমরা সরকারের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করবো। আমরা চাই না এই ধরনের পক্ষপাতমূলক আচরণের কোনও কর্মকর্তা প্রশাসনে থাকুক।’
পুলিশ সুপার মারুফাত হোসেন জানান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সে রিপোর্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।