গোপালগঞ্জে রাজনৈতিক সহিংসতায় পাঁচ জন নিহত, অনেকে আহত ও বহু সংখ্যক আটক হওয়ার প্রেক্ষাপটে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) একটি চার সদস্যের তথ্য-অনুসন্ধান প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শনে জেলায় পৌঁছেছে।
সোমবার (২১ জুলাই) প্রতিনিধি দলটি গোপালগঞ্জে উপস্থিত হয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, নিহত, আহত ও আটক ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং হাসপাতাল, কারাগার ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করেছে।
আসকের সিনিয়র কো-অর্ডিনেটর আবু আহমেদ ফয়জুল কবিরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন- ঝর্ণা খানম, তৌহিদ আহমেদ রানা ও মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম।
তথ্য অনুসন্ধানকালে প্রতিনিধি দল গোপালগঞ্জ কেন্দ্রীয় পুরাতন কবরস্থানে যান, যেখানে সহিংসতায় নিহত রমজান কাজী ও ইমন তালুকদারের লাশ উত্তোলনের সময় তারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন এবং ঘটনার বিষয়ে পারিবারিক বক্তব্য গ্রহণ করেন।
পরে প্রতিনিধি দল নিহত দীপ্ত সাহার বাসায় গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দীপ্তের পরিবার জানান, তারা এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে বিচার দাবি করেন।
তথ্য অনুসন্ধানকালে প্রতিনিধি দল আরও জানতে পারে, নীলফামারী থেকে রাজমিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে গোপালগঞ্জে আসা দুই কিশোরকে শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকালে পুলিশ আটক করে। সোমবার তাদের গোপালগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আসক দুই কিশোরের পরিবারের প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এ ছাড়া প্রতিনিধি দল গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জীবিতেষ বিশ্বাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নিহতদের ময়নাতদন্ত প্রক্রিয়ার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন। তিনি জানান, আজ তিনটি লাশ ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হবে এবং এ জন্য আট সদস্যবিশিষ্ট একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় নিহত অপর ব্যক্তি সোহেল তালুকদারের বাবা ইদ্রিস আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করে আসক তথ্য অনুসন্ধান টিম। তিনি আসককে জানান, তার ছেলের লাশ তাদের গ্রামের বাড়ি টুঙ্গিপাড়া থানাধীন পারিবারিক কবরস্থান থেকে উত্তোলন করার জন্য পুলিশ এসেছে। লাশ উত্তোলনের পরে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে নিয়ে এলে সেখানে লাশের সঙ্গে আসা পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য গ্রহণ করে আসক।
এ ছাড়াও আসকের প্রতিনিধিরা গোপালগঞ্জ কারাগারের জেল সুপারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি জানান, বুধবারের (১৬ জুলাই) পরে মোট ১৮ কিশোরকে আদালতের আদেশে কারাগার থেকে যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও এ পর্যন্ত মোট ১৫০ বন্দিকে দুটি জেলা কারাগারে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এর মধ্যে বাগেরহাটে ৫০ ও পিরোজপুরে ১০০ জনকে পাঠানো হয়েছে। গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারের ধারণক্ষমতা ৩৪৮। আজকে কারাগারে বন্দি রয়েছেন ৭৫১।