রাজধানী উত্তরা দিয়াবাড়ী মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত শিক্ষিকা মাসুকা বেগম নিপুর মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে ভগ্নিপতির বাড়িতে আনা হয়েছে।
স্বজনেরা জানান, শিক্ষিকা মাসুকা বেগম নিপু মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা মিডিয়ামের ইংরেজি শিক্ষক ছিলেন। বিমান দুর্ঘটনার সময় তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছিলেন। পরে তিনি গুরুতর আহত হওয়ার পর তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। পরে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (২১ জুলাই) রাত সোয়া ১২টার দিকে মারা যান। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মাসুকা বেগম নিপুর বোনের মেয়ে ফাহমিদা খানম হৃদি বলেন, খালামণি আমাদেরকে খুবই আদর করতেন। সন্তানের মতো ভালবাসতেন। তিনি কখনও কখনও শাসনও করতেন। তবে তার মধ্যেও আদর ছিল। আমরা খালামণির মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়েছি। মহান আল্লাহর কাছে এবং দেশবাসীর কাছে খালামণির জন্য দোয়া চাচ্ছি।
নিহতের পিতা সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমার কন্যার মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যরা ভেঙে পড়েছে। আমি আর বেশি কিছু কথা বলতে পারছি না। আমি সবার কাছে দোয়া চাই, আমার মেয়ের জন্য।
নিহতের বোনের স্বামী খলিলুর রহমান বলেন, আমার শালিকা খুব বিনয়ী এবং ভদ্র ছিলেন। আকস্মিক এই মৃত্যু আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। আল্লাহ তাকে বেহেশতে নসিব করুক। দেশবাসীর কাছে তার জন্য দোয়া চাচ্ছি। নিহত সব শিশুর জন্য দোয়া চাচ্ছি। প্রতিটি পরিবার যেন এই শোক সহ্য করার তৌফিক দান করেন, মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে এই প্রার্থনা করছি।
নিহত শিক্ষিকা মাসুকা বেগম নিপুর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চিলোকুট গ্রামে। তিনি চিলোকুট চৌধুরী বাড়ির সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরীর মেয়ে। তবে তার বৃদ্ধ বাবা, বড় মেয়ে পাপিয়া আক্তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা সোহাগপুর গ্রামে বসবাস করছেন। যার কারণে ওই শিক্ষিকার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মঙ্গলবার বাদ আসর আশুগঞ্জ সোহাগপুর ঈদগাহে নামাজে জানাজা শেষে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।
জানাজা আশুগঞ্জের বিশিষ্টজনরা অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তারা দোয়া কামনা করেন।
ভৈরব জিল্লুর রহমান সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আবু হানিফ বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে সে আমার আদরের ছাত্রী ছিল। শিক্ষা জীবনে মাসুকা অত্যন্ত বিনয়ী এবং মেধাবী ছিল। তার জানাজা পড়তে হবে, সেটা কখনও ভাবিনি। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাজী শাহজাহান সিরাজ বলেন, মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় পুরা দেশ স্তব্ধ। আমরা তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি। আমাদের দলের প্রধান তারেক রহমানের পক্ষ থেকেও গভীর শোক প্রকাশ করছি। নিহতের পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
শিক্ষিকা মাসুকা বেগম নিপু দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে ছিলেন সবার ছোট। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত ছিলেন।

















