Swadhin News Logo
বুধবার , ২৩ জুলাই ২০২৫ | ১১ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. best
  2. cassinoBR
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি ও প্রকৃতি
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. চাকরি
  8. জাতীয়
  9. জোকস
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. দেশজুড়ে
  12. ধর্ম
  13. নারী ও শিশু
  14. প্রবাস
  15. বই থেকে

বিমান দুর্ঘটনায় রজনীর জীবনাবসান, কুষ্টিয়ার গ্রামে শোকের ছায়া

প্রতিবেদক
Nirob
জুলাই ২৩, ২০২৫ ৪:১১ পূর্বাহ্ণ
বিমান দুর্ঘটনায় রজনীর জীবনাবসান, কুষ্টিয়ার গ্রামে শোকের ছায়া

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হন কুষ্টিয়ার রজনী ইসলাম (৩৭)। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে ভোর ৫টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তার মরদেহ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সাদিপুর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়।

রজনী ইসলাম দৌলতপুর উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের সাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা, স্বামী ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলামের সঙ্গে তিনি ঢাকায় বসবাস করতেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, রজনী ইসলাম সোমবার দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে তার পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে ঝুমঝুমকে আনতে গিয়েছিলেন। মেয়েকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা গেলেও তার মা রজনীর কোনও খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) একটি শাড়ি দেখে মরদেহ শনাক্ত করেন তার স্বামী জহুরুল ইসলাম।

মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জানাজা শেষে ১০টার দিকে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয় রজনী ইসলামকে। তার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে গোটা গ্রাম শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে।

রজনী ও জহুরুল দম্পতির তিন সন্তান—এক মেয়ে ও দুই ছেলে। বড় ছেলে এস এম রুবাই এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। মেয়ে ঝুমঝুম ও ছোট ছেলে এস এম রোহান মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষার্থী। রোহান ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে, তবে সেদিন অসুস্থ থাকায় স্কুলে যায়নি।

পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রায় দুই দশক ধরে জহুরুল ইসলাম পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন এবং গার্মেন্টস ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রজনীর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর মরদেহ নিয়ে রাত ১০টার দিকে তারা রওনা হন গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে। পথে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বাওট গ্রামে রজনীর বাবার বাড়িতে কিছু সময়ের জন্য মরদেহ রাখা হয়। পরে ভোরের দিকে তা দৌলতপুরের নিজ গ্রামে পৌঁছায়।

মরদেহ আসার পর আশপাশের এলাকার মানুষ ছুটে আসেন শেষবারের মতো রজনীকে দেখার জন্য। তার এমন করুণ মৃত্যুর খবরে অনেকের চোখেই পানি চলে আসে। তিন সন্তানকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে স্বজনরাও কান্নায় ভেঙে পড়েন।

রজনীর স্বামী জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি তখন চট্টগ্রামে ব্যবসার কাজে ছিলাম। দুর্ঘটনার খবর শুনেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিই। মেয়েকে উদ্ধার করা গেলেও রজনীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে সিএমএইচে গিয়ে দূর থেকে তার শাড়ি দেখে মরদেহ শনাক্ত করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘রজনীর মাথার পেছনে আঘাত ছিল, শরীরে কোনও পোড়ার চিহ্ন নেই। হয়তো বিমানের কোনও অংশ তার মাথায় পড়ে। এটা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। মেনে নেওয়া খুব কঠিন, কিন্তু না মেনে উপায়ও নেই।’

রজনীর দেবর আহসানুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুল শেষে মেয়ে ঝুমঝুম ক্যানটিনে ছিল। মায়ের সঙ্গে তার দেখা বা কথা হয়নি। দুর্ঘটনার খবর শুনে পরিবারের অন্য সদস্যরা স্কুলে ছুটে যান ঝুমঝুমকে খুঁজতে।’

উল্লেখ্য, সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্যাম্পাসে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় পতিত হয়। এখন পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, যাদের মধ্যে ২৫ জন শিশু, একজন শিক্ষক এবং একজন পাইলট রয়েছেন। আহত অবস্থায় আরও অনেকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক