Swadhin News Logo
শুক্রবার , ২৫ জুলাই ২০২৫ | ২৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. best
  2. আন্তর্জাতিক
  3. কৃষি ও প্রকৃতি
  4. ক্যাম্পাস
  5. খেলাধুলা
  6. চাকরি
  7. জাতীয়
  8. জোকস
  9. তথ্যপ্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. ধর্ম
  12. নারী ও শিশু
  13. প্রবাস
  14. বই থেকে
  15. বিচিত্র নিউজ

অনুদানের টাকা ভাগাভাগির দ্বন্দ্বে প্রকাশ হলো ভুয়া শহীদের তথ্য

প্রতিবেদক
Nirob
জুলাই ২৫, ২০২৫ ৯:৪৯ অপরাহ্ণ
অনুদানের টাকা ভাগাভাগির দ্বন্দ্বে প্রকাশ হলো ভুয়া শহীদের তথ্য

রোগাক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন বশির সরদার (৪০)। তার মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখিয়ে মৃত ব্যক্তিকে জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে তার স্বজনদের বিরুদ্ধে। সরকার থেকে পাওয়া অনুদানের টাকার ভাগ নিয়ে পরিবারে মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হলে ২২ জুলাই জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন নিহত বশিরের বড় ভাই নাসির সরদার।

নিহত বশির সরদার বদরপুর ইউনিয়নের খলিশাখালি গ্রামের সেকান্দার সরদারের ছোট ছেলে। তিনি জেলা শহরের পৌর নিউমার্কেট এলাকায় চায়ের দোকান করতেন।

লিখিত অভিযোগে ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৩ জুলাই পায়ে লোহা ঢুকে আহত হন বশির সরদার। এরপর তাকে ঢাকায় চিকিৎসা করানোর সময় জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণের তথ্য লিপিবদ্ধ করায় পরিবার। পরে ১৫ নভেম্বর তিনি মারা যায়। পরে ওই মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখিয়ে জেলা প্রশাসন থেকে দুই লাখ এবং সরকার থেকে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দেওয়া হয় ওই পরিবারকে। পরবর্তী সময়ে এই অনুদানের অংশ ভাগ করা নিয়ে পরিবারে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। ওই দ্বন্দ্বের জেরে গত ২২ জুলাই বশিরের বড় ভাই নাসির সরদার প্রকৃত ঘটনা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

এদিকে, অভিযোগের সত্যতা যাচাই-বাছাই শেষে, শহীদের তালিকা থেকে নিহত বশিরের নাম বাতিল এবং সরকার থেকে দেওয়া সঞ্চয়পত্র স্থগিতের সুপারিশ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে চিঠি পাঠান পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে পাঠানো চিঠিতে জেলা প্রশাসক  উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের প্রথম দিকে পায়ে লোহা বিদ্ধ হয়ে বশির সরদার আহত হন। এরপর ওই বছরের ১৫ নভেম্বর তিনি মারা যান। কিন্তু বশির সরদারের পরিবার অনুদান পেতে গত বছরের ৩ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত দেখিয়ে ঢাকায় চিকিৎসা নেয়। এরপর শহীদের তালিকার তার নাম অন্তর্ভুক্ত করানো হয়।

পটুয়াখালী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও ছাত্র প্রতিনিধি সজিবুল ইসলাম সালমান ও মিরাজ ইমতিয়াজ বলেন, ‘ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর সময় জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণের তথ্য লিপিবদ্ধ করায় ওই ব্যক্তির পরিবার। মারা যাওয়ার পরে অনুদানের টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হলে বেরিয়ে আসে মূল রহস্য। এরপর ২৩ জুলাই জেলা প্রশাসক একটি সভার মাধ্যমে নিহত বশিরের নাম শহীদের তালিকা থেকে বাতিল চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে চিঠি পাঠান।’

নিহত বশিরের স্ত্রী রেবা আক্তার জানান, গত বছরের ৩ জুলাই জেলা শহরের চৌরাস্তা থেকে বাসায় ফেরার পথে পায়ে লোহা ঢুকে তার স্বামী মারাত্মকভাবে আহত হন। এতে তার পায়ে পচন ধরে গেলে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নেওয়া হয়। তার চিকিৎসা করাতে অনেক ধারদেনা করতে হয়েছে। ২৪ সালের ১৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে বাড়ি নিয়ে আসার পথে তার স্বামী মারা যান।

বশিরের স্ত্রী আরও জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পরে দুই সন্তানের ভরণপোষণ নিয়ে তিনি একপ্রকার অসহায় হয়ে পড়েন। পরে বশিরের বড় ভাই নাসির সরদারের প্ররোচনায় সরকারি অনুদান পেতে ভুল তথ্য দিয়ে শহীদের তালিকায় তার স্বামীর নাম অন্তর্ভুক্ত করতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু এক পর্যায় অনুদানের একটি বড় অংশ দাবি করেন বশিরের বাবা-মা ও বড় ভাই। তাদের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ক্ষুব্ধ হয়ে ডিসির কাছে অভিযোগ করেন।

নিহত বশিরের বড় ভাই নাসির সরদার জানান, তার ছোট ভাই বশির গণ অভ্যুত্থানে অংশ নিয়ে আহত হননি। কিন্তু আহত ঘটনায় তাকে চিকিৎসা করাতে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। তাই সরকারি অনুদান পেতে শহীদের তালিকা নাম অন্তর্ভুক্ত করানো হয়। পরবর্তী সময়ে তিনি তার অপরাধ বুঝতে পেরে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করে প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরেন।

নিহত বশিরের বাবা সেকান্দার সরদার বলেন, তার ছোট ছেলে বশির আহত হওয়ার পর চিকিৎসা করাতে তিনি ৫ লাখ টাকা খরচ করেন। কিন্তু সরকারের দেওয়া অনুদানের ১২ লাখ তার পুত্রবধূ (বশিরের স্ত্রী) রেবা আক্তার একাই ভোগ করছেন। যে কারণে তার বড় ছেলে প্রকৃত ঘটনা উল্লেখ করে ডিসির কাছে অভিযোগ করেন।

পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন জানান, তার পরিবারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্য নিয়ে জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক রেজুলেশন করে সংশ্লিষ্টদের চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে পরবর্তী নির্দেশনা এলে এ বিষয়ে কর্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক